প্রেসিডেন্ট রায়িসিকে উদ্ধার অভিযানে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে ইরাক

ইরান
  © সংগৃহীত

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রায়্যিসিকে নিয়ে বহন করা হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। আজ রবিবার (১৯ মে) উত্তর-পশ্চিম ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা শহরে এটি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে অবতরণ করে। এরই মধ্যে উদ্ধারে যোগ দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য বাহিনী।

এদিকে ইব্রাহিম রায়িস্যিকে উদ্ধার অভিযানে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে ইরাক। ইরাকের সরকার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সংস্থাকে প্রেসিডেন্ট রাইসির নিখোঁজ হেলিকপ্টারের সন্ধানে সহায়তা করার নির্দেশ দিয়েছে।

হেলিকপ্টারটি পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের একটি ঘন বন ও পাহাড়ি এলাকায় আছড়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই জায়গাটি একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় সেখানে উদ্ধারকারীদের পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা নিয়ে ইরানেই ধোঁয়াশা চলছে। কেউ স্পষ্টভাবে কোনো তথ্য জানাচ্ছে না।

প্রেসিডেন্টের আকস্মিক মৃত্যু হলে, ইরানের সংবিধান অনুযায়ী প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনক্রমে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। বর্তমানে মোহাম্মদ মোখবার এ দায়িত্ব পালন করছেন। 

ইরানের রাজনৈতিক শ্রেণিবিন্যাস অনুসারে, রাষ্ট্রের প্রধান হলেন সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনি এবং রাষ্ট্রপতিকে সরকারের প্রধান, সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

যখন সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মারা যান, তখন প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্বে থাকবেন এবং ৫০ দিনের মধ্যে দেশকে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার জন্য একটি নির্বাচনে যেতে হবে।

দুর্ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ জানান, আছড়ে পড়া হেলিকপ্টারটিতে রাইসি ছিলেন না। আবার অনেকে দাবি করেন, প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার থেকে হেডকোয়ার্টারে যোগাযোগ করা হয়েছে।

তবে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ইরানি প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারে না থাকা এবং হেলিকপ্টার থেকে যোগাযোগ করার যে তথ্য ছড়ানো হয়েছে— সেগুলোর কোনোটিই সত্যি নয়।

কিন্তু যেটি সত্য সেটি হলো রাইসি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাকে খুঁজে পেতে অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ভাহিদি বলেছেন, বিভিন্ন উদ্ধারকারী দল হেলিকপ্টারটির সন্ধানে এখনও তল্লাশি চালাচ্ছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভাহিদি বলেন, খারাপ আবহাওয়া ও কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনাস্থলে যেতে সময় লাগবে।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং উদ্ধারকারী দল তাদের কাজ করছে। আমরা আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব এটি সম্পন্ন হবে।

ইরান বিভিন্ন ধরনের হেলিকপ্টার ব্যবহার করে। তবে কয়েক দশক ধরে পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাখায় নতুন হেলিকপ্টার অথবা যন্ত্রাংশ ক্রয় করতে পারে না দেশটি। দেশটির সামরিক বাহিনীর অনেক হেলিকপ্টার ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের সময়েরও আগের।

সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা