গাজায় যুদ্ধবিরতি

নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবকে স্বাগত জানালো হামাস

গাজা
  © ফাইল ছবি

গত আট মাসের অধিক সময় ধরে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় আগ্রাসন ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। হামাসকে ধ্বংস করার নামে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এই আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। তবে বেসামরিক মানুষ হতাহত বেশি হওয়ায় গাজায় আগ্রাসন বন্ধে ব্যাপক চাপ দিয়ে যাচ্ছিলো জাতিসংঘ। এরই অংশ হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছে। আর নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের সংগঠন হামাস।

আজ মঙ্গলবার (১১ জুন) ফিলিস্তিনি সামা নিউজ এজেন্সির বরাতে ইরনা এ তথ্য জানায়।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) একটি প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মাহমুদ আল-মারদাভি জানান, তাদের লক্ষ্য গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধের অবসান ও অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা।

তিনি বলেন, আমরা গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই। এটি বাস্তবায়নে মধ্যস্থতাকারীদের (যুক্তরাষ্ট্র) সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।

তিনি আরও বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের অবশ্যই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে দখলদার ইসরায়েলিদের কাছ থেকে একটি প্রকাশ্য প্রতিশ্রুতি বা চুক্তি পেতে হবে, যাতে আমরা আলোচনায় বসতে পারি। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই এই চুক্তির নিশ্চয়তা দিতে হবে।

সামি আবু জুহরি নামে হামাসের আরেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন এবং বিস্তারিত আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে ইসরায়েল এটি মেনে চলবে কি না তা যুক্তরাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তেলআবিবে বলেন, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এই আলোচনা মঙ্গলবার বিকেল এবং আগামী কয়েক দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর এ তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে, সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেওয়া গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়। তবে এই প্রস্তাবের বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হওয়ার পর ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জানান, তার দেশ এই ‘অর্থহীন এবং অন্তহীন’ আলোচনায় জড়িত হবে না, যা হামাসের জন্য উপকারী হতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এ সময় আরও ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় সশস্ত্র যোদ্ধারা।

এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, আট মাস ব্যাপী এই হামলায় ইসরায়েলের হাতে ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। হামলায় ধংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।