১৪ জুন ২০২৪, ১১:৪৫

জিডিপি বাড়েনি, পরিবর্তে গাধা বেড়েছে পাকিস্তানে

  © ফাইল ছবি

২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের জন্য যে জিডিপি বৃদ্ধির লক্ষ্য স্থির করেছিল পাকিস্তান, তা পূরণ হচ্ছে না। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩.৫ শতাংশ বৃদ্ধির। কিন্তু, জিডিপি বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২.৩৮ শতাংশ। বুধবার (১২ জুন), পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২৩-২৪ প্রকাশ করেছেন সেই দেশের অর্থমন্ত্রী মহম্মদ ঔরঙ্গজেব। এই সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের শিল্প এবং পরিষেবা ক্ষেত্রে, প্রত্যাশিত মাত্রায় বৃদ্ধি হয়নি বলেই জিডিপির লক্ষ্যপূরণ হয়নি। তবে, এই ব্যর্থতাকে অন্য এক অর্জন দিয়ে আড়াল করতে চেয়েছে ইসলামাবাদ। 

 

অর্থনৈতিক সমীক্ষায় ‘হাইলাইট’ করা হয়েছে, পাকিস্তানে গাধার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। হ্যাঁ, গাধার সংখ্যা বৃদ্ধি দিয়েই জিডিপি লক্ষ্যপূরণ না করতে পারার ব্যর্থতা ঢেকেছে ইসলামাবাদ।

 

অনেকে অবাক হতে পারেন, কেন হঠাৎ অর্থনৈতিক সমীক্ষায় গাধার সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে গর্ব করছে পাকিস্তান। আসলে, বহু পাকিস্তানিদের জন্যই গাধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গাধা। ৮০ লক্ষেরও বেশি গ্রামীণ পরিবার পশু পালনের সঙ্গে যুক্ত। পশুসম্পদই পাকিস্তানের গ্রামীণ অর্থনীতির মূল ভিত্তি। অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, গাধার সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ১.৭২ শতাংশ বেড়ে ৫৯ লক্ষ হয়েছে। তবে শুধু গাধা নয়, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পশুসম্পদের পরিসংখ্যানও তুলে ধরা হয়েছে এই আর্থিক সমীক্ষায়। বর্তমানে পাকিস্তানে গরুর সংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লক্ষ, মহিষ ৪ কোটি ৬৩ লক্ষ, ভেড়া ৩ কোটি ২৭ লক্ষ এবং ছাগলের সংখ্যা ৮ কোটি ৭০ লক্ষ হয়েছে। গত চার বছর ধরে অপরিবর্তিত ছিল উটের সংখ্যা। তবে এই বছর তাও বেড়ে ১১ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ হয়েছে।

সব মিলিয়ে পশুসম্পদ খাত পাকিস্তানের জিডিপিতে ১৪.৬৩ শতাংশ অবদান রেখেছে। প্রাণিসম্পদ সেক্টরের অর্থনৈতিক অবদান ৩.৯ শতাংশ বেড়েছে। 

 

পাক অর্থমন্ত্রী মহম্মদ ঔরঙ্গজেব আরো জানিয়েছেন, কৃষিক্ষেত্রের বৃদ্ধি, অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রকে ছাপিয়ে গিয়েছে। চলতি আর্থিক বছরে কৃষিক্ষেত্রে পাকিস্তানের বৃদ্ধি হয়েছে ৬.২৫ শতাংশ। 

 

পাক অর্থমন্ত্রীর দাবি, গত ১৯ বছরে কৃষি খাতে এত শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি। কৃষি ক্ষেত্রে এই প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি কিন্তু পশুসম্পদ খাতই। সমীক্ষা অনুসারে, বিগত অর্থবর্ষে পাকিস্তানে পশুসম্পদ ক্ষেত্র, কৃষি খাতের বৃদ্ধিতে ৬০.৮৪ শতাংশ অবদান রেখেছে।

সমীক্ষায় আরও ধরা পড়েছে, পাকিস্তানের মূল্যবৃদ্ধির হার কমে ১১.৮ শতাংশে নেমে এসেছে। 

 

তবে, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমীক্ষায় সরকারি সম্পদ বিক্রির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। পাক অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাক সরকার লোকসানে থাকা সরকারি সংস্থাগুলিকে বিক্রি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাকিস্তান এয়ারলাইন্সকেও বেসরকারীকরণ করা হবে।