ইসরায়েলি হামলায় পরিবারের ১০ সদস্য হারিয়েছেন ইসমাইল হানিয়া

গাজা
  © ফাইল ছবি

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।

এর মধ্যেই ইসরায়েলি হামলায় পরিবারের ১০ সদস্য হারিয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া। গাজায় তার পরিবারের বাড়িতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বোমা হামলা চালালে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে ইসমাইল হানিয়ার বোনও রয়েছেন। মঙ্গলবার (২৫ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উত্তর গাজায় হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়ার পরিবারের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে এবং এতে তার বোনসহ অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরা আরবি জানিয়েছে।

এর আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা শহরের কাছে শাতি ক্যাম্প এলাকায় হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছিল সংবাদমাধ্যমটি। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, হামলায় নিহতরা সবাই হানিয়ার পরিবারের সদস্য।

এর আগে গত এপ্রিলে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইসমাইল হানিয়ার তিন ছেলে ও তিন নাতি-নাতনি নিহত হয়েছিলেন। গত ১০ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের দিন গাজার আল শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে হানিয়ার ছেলেদের বহনকারী গাড়িতে চালানো হামলায় তারা প্রাণ হারান।

মূলত ঈদ উপলক্ষ্যে হানিয়ার ছেলেরা আল শাতি ক্যাম্পে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বলে সেসময় জানিয়েছিল ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলো।

এদিকে ছেলে ও নাতি-নাতনিদের মৃত্যুর খবরে (শহীদ হওয়ায়) আল্লাহর কাছে সেসময় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছিলেন হামাস প্রধান। তিনি বলেছিলেন, ‘তাদের শহীদ হওয়ার মর্যাদা প্রদান করায় আল্লাহকে ধন্যবাদ।’

প্রসঙ্গত, হামাসকে নির্মূলের যুদ্ধের নামে ইসরায়েল গত আট মাসে ৩৭ হাজার ৬২৬ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি এই আগ্রাসন গাজায় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।