বিশ্বজুড়ে এয়ারলাইন্সের ভাড়া কমছে
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৫ PM , আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৫ PM

করোনা মহামারির পর সারা বিশ্বে উড়োজাহাজের ভাড়া নিয়ে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, তা ক্রমেই কমে আসছে। সেই সাথে আকাশপথে ভ্রমণ আরও সস্তা হচ্ছে।
চলতি বছরই ৬ বার ভাড়ায় ছাড় দিয়েছে কোয়ান্টাস এয়ারওয়েজ। এয়ারলাইনসটি সাধারণত ভাড়ার বিষয়ে এতোটা ছাড় দেয় না। ভার্জিন অস্ট্রেলিয়াও প্রায় প্রতি মাসেই কোনো না কোনো ছাড় দিচ্ছে। এমনকি রায়ানএয়ারও ইউরোপের যাত্রীদের কম টাকায় ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে। এয়ারলাইনসটি বলছে, ফ্লাইটের ভাড়া কমছে।
কোভিড পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে শুরু হয় তোড়জোর। হঠাৎ চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় উড়োজাহাজের ভাড়াও বেড়ে যায় অনেক। এখন বিশ্বজুড়ে যতই ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়ছে, ততই এয়ারলাইনসগুলো নানা অফার নিয়ে যাত্রীদের কাছে আসছে। এই হার এশিয়া ও ইউরোপেই বেশি, যেখানে ভাড়া নিয়ে মানুষ বেশি সচেতন।
ব্রিসবেন ভিত্তিক ট্রাভেল এজেন্সি ফ্লাইট সেন্টার ট্রাভেল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেমস কাভানাঘ বলেন, ‘এটাই এখন গ্লোবাল ট্রেন্ড। এয়ালাইনসগুলো এখন আর সর্বময় ক্ষমতাবান নয়।’
গত বুধবার ফ্লাইট সেন্টারের প্রকাশ করা তথ্যে দেখা যায়, এ বছরের প্রথমার্ধে বৈশ্বিক ফ্লাইটের ভাড়া কমার হার ৬ দশমিক ১৩ ভাগ। অস্ট্রেলিয়া থেকে যাওয়া ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ভাড়া কমেছে ১৩ শতাংশ। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ানদের প্রিয় গন্তব্য বালিতে ফ্লাইটের ভাড়া কমেছে ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।
জেমস কাভানাঘের ধারণা, ভাড়া আরও কমবে। কারণ জীবনযাপনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় দামের ক্ষেত্রে মানুষের বাছবিচার বেড়েছে।
হংকংভিত্তিক গ্রেটার বে এয়ারলাইস গত সপ্তাহে শতাধিক ফিরতি ফ্লাইটের টিকিট মাত্র ২ দশমিক ৫৬ ডলারে বিক্রি করেছে। গত মঙ্গলবার প্রায় ১০ লাখ অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের টিকিট প্রতিটি ১০৯ অস্ট্রেলিয়ান ডলারের কমে বিক্রির ঘোষণা করেছে কোয়ান্টাস। এ বছরেই এটা ছিল এয়ারলাইনসটির ষষ্ঠ অফার।
অবশ্য সকলেই এই ট্রেন্ডে গা ভাসাচ্ছেন না। কাতার এয়ারের প্রধান নির্বাহী বদর মোহাম্মদ আল–মির গত সপ্তাহেই এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, গালফ অঞ্চলের এয়ারলাইনসগুলোতে যাত্রীদের চাপ বাড়ছে।
অন্যদিকে, একই সময়ে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজের সংকট এভিয়েশন খাতের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্যে বাধা তৈরি করেছে। বোয়িং কিংবা এয়ারবাসের নতুন উড়োজাহাজের জন্য এয়ারলাইনসগুলো বছরের পর বছর অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। এয়ারবাসের প্রধান নির্বাহী গুইলাম ফাউরি গত মঙ্গলবার জানিয়েছেন, প্রচুর উড়োজাহাজ সরবরাহের অপেক্ষায় থাকায় নতুন চাহিদা নেওয়ার ক্ষেত্রে ধীরে চলো নীতি নেওয়া হয়েছে।
টিকিটের দাম কমে যাওয়ায় বেশ কিছু এয়ারলাইনসের শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিনিয়োগকারী কিছুটা সংকটে পড়েছেন। ব্লুমবার্গ ওয়ার্ল্ড এয়ারলাইনস ইনডেক্স বলছে, আমেরিকান এয়ারলাইনস, এয়ার চায়না ও লুফথানজা গত ১২ মাসে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হারিয়েছে।
ইউরোপে তুমুল জনপ্রিয় রায়ান এয়ারের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা নেইল সোরাহান জানিয়েছেন, এ বছর এখন পর্যন্ত এয়ারলাইনসটির প্রবৃদ্ধি কমেছে ২৬ শতাংশ।