শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি
বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য আদানির উৎপাদিত বিদ্যুৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত বদল
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:১০ PM , আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:১০ PM

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পলায়ন করেন শেখ হাসিনা। তার ক্ষমতাচ্যুতির পরে এবার আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ রপ্তানি নিয়ম সংশোধন করেছে ভারত। শুধু বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য আদানির যে বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল, সেটা থেকে এখন ভারতেও বিদ্যুৎ বিক্রি করা যাবে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ ফেডারেল পাওয়ার মিনিস্ট্রির একটি মেমো হাতে পেয়েছে রয়টার্স। এটিতে ১২ আগস্ট লেখা ছিল। রয়টার্স বলছে, তাতে একচেটিয়াভাবে একটি প্রতিবেশী দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ২০১৮ সালে যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল তা সংশোধন করা হয়েছে। এখন থেকে আদানির নির্মিত কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ভারতেও সরবরাহ করা যাবে।
বর্তমানে ভারতের পূর্ব ঝাড়খন্ড রাজ্যে আদানির শুধু এই একটি প্ল্যান্ট রয়েছে। এখানে উৎপাদিত ১০০ শতাংশ বিদ্যুতই বাংলাদেশে রপ্তানির চুক্তির অধীনে ছিল।
প্রাপ্ত মেমোতে উল্লেখ আছে, ভারত সরকার পূর্ণ বা আংশিকভাবে দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ বিক্রির সুবিধার্থে জাতীয় গ্রিডে আদানিকে সংযোগের অনুমতি দিতে পারে। এ ছাড়া অর্থপ্রদানে বিলম্ব হলেও স্থানীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে রয়টার্স আদানি গ্রুপের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, ভারতের জ্বালানি খাতের স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে।
এ কর্মকর্তা জানান, তিনি এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, যদি একটি প্ল্যান্টের ক্ষমতা থাকে এবং দেশের বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনি কেন স্থানীয় গ্রিডে সরবরাহ করা বন্ধ করবেন? ভারতীয় ব্যাংকগুলো এ জন্য অর্থও প্রদান করবে।
প্রসঙ্গত, ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুরো সক্ষমতায় উৎপাদন বুঝিয়ে দিতে ভারতের আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানি বাংলাদেশ সফর করেন। তখন তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
তবে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘিরে বাংলাদেশের স্বার্থ লঙ্ঘিত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। আদানি চুক্তি বিরোধিতাকারীরা তখন বলেছিলেন, ২৫ বছর মেয়াদি এ চুক্তির মাধ্যমে মুনাফা বৃদ্ধির বিশেষ সুযোগ নিয়েছে ভারতীয় কোম্পানিটি। এ বিদ্যুৎ চুক্তিকে দেশের ‘স্বার্থবিরোধী’ হিসেবে উল্লেখ করে এটি সংশোধন, এমনকি বাতিলেরও দাবি তোলা হয়েছে।