ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৮:২৭ AM , আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৮:২৭ AM
কিছুতেই থামছে না ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বরতা। উপত্যকাটিতে দখলদার বাহিনীর হামলায় আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার ৩০০ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৯৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪০ হাজার ২৬৫ জনে পৌঁছেছে বলে বৃহস্পতিবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত ৯৩ হাজার ১৪৪ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৪২ জন নিহত এবং আরও ১৬৩ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর এসব হামলা ও গণহত্যায় সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব। ইসরায়েলের এসব নৃশংসতাকে হামাসের জন্য হচ্ছে বলে একঘেয়ে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমারা। শুধু তাই নয়, অর্থ, অস্ত্র ও নিরাপত্তা সহযোগিতাও করছে। এর ফলে পশ্চিমাদের হিপোক্রেসি সবার সামনে উন্মোচিত হয়েছে। যদিও আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেনসহ অধিকাংশ পশ্চিমা দেশগুলোর জনগণের বিশাল একটা অংশ এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তবে দেশগুলো পুলিশ দিয়ে কঠোরভাবে এসব বিক্ষোভ দমন করেছে।
এখন কার্যত ফিলিস্তিনিদেরকে ইসরায়েলি গণহত্যার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।