বাংলাদেশে ‘সবচেয়ে সস্তায়’ বিদ্যুৎ বিক্রির দাবি আদানির

বিদ্যুৎ
  © ফাইল ফটো

ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে বাংলাদেশ বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনছে—এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল বাংলাদেশের গণমাধ্যমে। তবে সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে আদানি পাওয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বাংলাদেশে আমদানি করা কয়লায় যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালিত হয়, তাদের চেয়েও কম দামে বিদ্যুৎ দিচ্ছে তারা। 

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ২০২৩ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ক্রয়ে তুলনামূলক খরচের তালিকা তুলে ধরে আদানির একটি সূত্র জানিয়েছে, আদানি পাওয়ার বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৪ টাকা ০২ পয়সা দাম রাখছে। যেখানে বাংলাদেশের পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিটের দাম পড়ছে ১৬ টাকা ০২ পয়সা এবং রামপাল কেন্দ্রের প্রতি ইউনিটের দাম পড়ছে ১৪ টাকা ১২ পয়সা। 

আদানি পাওয়ার সর্বশেষ ১২ মাসে বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের গড় দামের তালিকাও তুলে ধরেছে। যেখানে বলা হয়েছে, বিগত ১২ মাসে আদানি পাওয়ার ১১ টাকা ৮৯ পয়সা প্রতি ইউনিট হারে বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করেছে। এ ছাড়া, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিটের গড় দাম পড়েছে ১৩ টাকা ৩৬ পয়সা, পায়রা থেকে পড়েছে ১২ টাকা এবং রামপালের প্রতি ইউনিটের গড় দাম পড়েছে ১৩ টাকা ৫৭ পয়সা। 

বাংলাদেশের কাছে আদানি পাওয়ারে বকেয়া ক্রমেই বাড়তে থাকলেও পিডিবির নির্ধারিত সূচি অনুসারে কোম্পানিটি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যাচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় অবস্থিত আদানির কয়লাচালিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা ১৬০০ মেগাওয়াট। ২০২৩ সালে পুরোপুরি চালু হওয়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশের মোট চাহিদার ৭-১০ শতাংশ সরবরাহ করে থাকে। 

এই অবস্থায় প্রতি মাসে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের কাছে ৯ থেকে ১০ কোটি ডলার বিল পায়। এরই মধ্যে বেশ কিছু পরিমাণ টাকা বাকি পড়ে গেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আদানি ও বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি কীভাবে সমাধান করা যায় তা নিয়ে কাজ করছে। 

বাংলাদেশে বর্তমানে চারটি আমদানি করা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পায়রা, রামপাল, মাতারবাড়ী ও বরিশাল ইলেকট্রিক পাওয়ারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (পিপিএ) রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার ইউএস ডলার লেটার অব ক্রেডিট (এলওসি) বা অগ্রিম ইউএস ডলার পেমেন্টের মাধ্যমে কয়লা সরবরাহ না করলে এই প্ল্যান্টগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।