রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে যা বলছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৬ PM , আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৬ PM
-12128.jpg)
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। তবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, এমন কোনো দালিলিক প্রমাণ তাঁর কাছে নেই। তিনি শুনেছেন যে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য নিয়ে সারা দেশে তোলপাড়। এ নিয়ে সরব হয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো?
আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন ৫ আগস্ট। তারপর থেকে প্রায় সাড়ে তিন মাস অতিক্রান্ত। বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়েছিলেন, হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু হাসিনা-পুত্র জয়ের দাবি ছিল, তাঁর মা দেশ ছাড়ার আগে পদত্যাগ করেননি। মাঝে সাড়ে তিন মাস পেরিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারও গঠন হয়েছে। কিন্তু হাসিনা কি আদৌ পদত্যাগ করেছিলেন? সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে এসেও সেই বিতর্কে ইতি পড়ল না। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহবুদ্দিনের দাবি, হাসিনা পদত্যাগ করেছেন— এমন কোনো প্রামাণ্য নথি তাঁর কাছে নেই।
এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিতে হয়। যে মুহূর্তে ইস্তফা দেবেন, তখন থেকেই প্রধানমন্ত্রীর পদ ফাঁকা হবে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বঙ্গভবনে (রাষ্ট্রপতির বাসভবন) ফোন এসেছিল। তখন বলা হয়েছিল, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বঙ্গভবনে আসবেন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল বঙ্গভবনে। কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যেই আবার ফোন এসেছিল। দ্বিতীয় ফোনে জানানো হয়েছিল, হাসিনা আর বঙ্গভবনে যাচ্ছেন না।’
ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য উইকের প্রতিবেদন এ ব্যাপারে বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এমন কোনো দালিলিক প্রমাণ রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, তিনি শুনেছেন যে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। কথোপকথনটি সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’—এ প্রকাশিত হয়েছে।
এ ঘটনা ফলাও করে প্রচার করেছে ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল। ‘হাসিনার পদত্যাগ-পত্র নেই, বলেছেন রাষ্ট্রপতি, তাহলে কি গণ-অভ্যুত্থান আসলে সেনার ‘ক্যু’ ছিল’–শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সে দেশে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনার বিদায় নিয়ে। জল্পনা শুরু হয়েছে, তাহলে কি গণ-অভ্যুত্থান নয়, সেনার অভ্যুত্থান তথা রক্তপাতহীন ‘ক্যু’-র কারণে হাসিনাকে সরে যেতে হয়েছে।’
এতে বলা হয়, ‘অনেকেই মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরাতে না পারলে সেনা প্রধান দেশের দায়িত্বভার নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন। তিনি দশ দিনের সফরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। জল্পনা শুরু হয়েছে তিনি দেশে ফেরার পর তাঁকে এবং রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলতে পারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাঁদের দাবি, সৈরাচারী শাসক হাসিনার জমানার কোনও পদাধিকারীকে পদে রাখা যাবে না।’
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভারতের প্রথম সারির বাকি সংবাদমাধ্যমগুলো এ নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।