গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ছাড়াল ৪৩ হাজার

গাজা
  © আনাদোলু

ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলি আগ্রাসন থামছেই না। পুরো বিশ্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গাজায় গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। আর তথাকথিত আত্মরক্ষার অধিকারের অজুহাতে এসব হত্যাকাণ্ডকে জাস্টিফাই করে যাচ্ছে পশ্চিমারা!

গত কয়েকদিন ধরে উত্তর গাজায় হামলা জোরদার করেছে দখলদার দেশটি। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। গাজার হামাস-চালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়। হামাস বলেছে, গাজার উত্তরে বেইট লাহিয়া শহরে ওই হামলা হয়েছে।

তবে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে উত্তর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহত ফিলিস্তিনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৯ জনে।

উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, একটি পাঁচতলা আবাসিক ভবনে হামলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মেঝেতে কম্বলে ঢাকা মরদেহ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মারওয়ান আল-হামস সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, আরও ১৭ জন ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ইসরায়েলি বাহিনী এ মাসের শুরুতে ওই এলাকায় হামলা শুরু করে। তাদের ভাষ্য, হামাস সেখানে পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে।

জাবালিয়ার নিকটবর্তী কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক হুসাম আবু সাফিয়া বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসা করা হচ্ছে। কর্মী ও ওষুধের অভাবে রোগীদের চিকিৎসা করতে হিমশিম খেত হচ্ছে।

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গত দুই সপ্তাহ ধরে উত্তর গাজায়, বিশেষ করে জাবালিয়া, বেইট লাহিয়া এবং বেইত হানুন এলাকায় হামলা চালাচ্ছে।

ইসরায়েল বলেছে, হামাস যোদ্ধাদের পুনরায় সংগঠিত হতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিবৃতিতে বলা হয়, জাবালিয়ায় ৪০ সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অনেক সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, উত্তর গাজা উপত্যকা এখন বড় ধরনের মানবিক সঙ্কটের মুখোমুখি। কয়েক হাজার মানুষ হতাশাজনক পরিস্থিতিতে বসবাস করছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক শুক্রবার বলেছেন,  ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পুরো জনসংখ্যাকে বোমাবর্ষণ, অবরোধ এবং অনাহারের ঝুঁকিতে ফেলছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ১২০০ জনের মতো নিহত হন। ওইদিনই গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় এ পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৬১ জনের মতো নিহত হয়েছেন।

গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের দ্বন্দ্বের জেরে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে। হামাসকে সমর্থন দিচ্ছে হিজবুল্লাহ। এ নিয়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তারা। এরই এক পর্যায়ে লেবাননে হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ ছাড়া ইরানের সঙ্গেও সংঘাত চলছে ইসরায়েলের।