পেহেলগাম ইস্যুতে পাকিস্তানের ফেবারে বক্তব্য; আসামে গ্রেপ্তার ৯

ভারত
  © ফাইল ছবি

ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগাঁওয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পর, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানকে সমর্থন জানানো মন্তব্যের জন্য আসামের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে একদিনে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

এই তথ্য এক্স নামক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি গ্রেপ্তারকৃতদের নাম এবং তাদের জেলা পরিচয়ও প্রকাশ করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: মো. জাবির হোসাইন (হাইলাকান্দি জেলা), এম এ কে বাহাউদ্দিন (শিলচর জেলা), মো. জাভেদ মজুমদার (শিলচর জেলা), মো. আমিনুল ইসলাম (নগাঁও জেলা), মো. সাহিল আলী (শিভাসনগর জেলা), মো. জারিফ আলী (বেরপাতা জেলা) এবং অনিল বানিয়া (বিশ্বনাথ জেলা)।

এক্সবার্তায় আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পেহেলগাঁওয়ে ঘৃণ্য সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো প্রকার সমর্থন সহ্য করবে না আসাম। কোনো ব্যক্তি যদি এমন করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে গত ২৪ এপ্রিল, অর্থাৎ পেহেলগাঁওয়ে হামলার দু’দিন পর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আসাম রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) বিধায়ক আমিনুল ইসলামকে। ২০১৯ সালে কাশ্মিরের পুলোওয়ামায় ভারতের আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে যে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল, সে সময় এই হামলাকে ‘বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করে একটি ভিডিওবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন এআইইউডিএফ আসাম রাজ্য শাখার জ্যেষ্ঠ নেতা আমিনুল ইসলাম। ২২ এপ্রিল পেহেলগাঁওয়ে হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার পুরোনো ভিডিওবার্তাটি ভাইরাল হয়। এর জেরে গ্রেপ্তার করা হয় বিধায়ক আমিনুল ইসলামকে।

রাজ্যপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার তাকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগাঁও জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার উপশাখা দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট।

স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে হামলাকারীরা অন্তত ২৬ পর্যটককে গুলি করে হত্যা করেছে। তাদের গুলিতে আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মিরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা।

ভয়াবহ এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত এবং তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির সিন্ধু নদের পানিবন্টন চুক্তি স্থগিতসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতের জন্য নিজেদের স্থল ও আকাশসীমা বন্ধসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও।

বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দুই বৈরী প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কূটনৈতিকভাবে চরম উত্তেজনা চলছে।

সূত্র : এনডিটিভি অনলাইন