পাকিস্তানে হামলাকে যে কারণে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিল ভারত
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ১১:৩৬ AM , আপডেট: ০৭ মে ২০২৫, ১১:৩৬ AM

জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে বুধবার ভোরে পাকিস্তানের একাধিক শহরে সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ভারতীয় সামরিক সূত্র জানায়, এই অভিযানে স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী যৌথভাবে অংশ নেয়। পাকিস্তানে এই সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।
ভারতের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, এই অভিযানে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালিয়েছে তারা।
‘অপারেশন সিঁদুর’ নামকরণ কেন হলো?
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ‘সিঁদুর’ হিন্দু বিবাহিত নারীর মঙ্গল ও স্বামীর দীর্ঘায়ুর প্রতীক। পেহেলগামে হামলায় যেসব নারী চোখের সামনে তাদের স্বামীকে হারিয়েছেন, তাদের কপালের সিঁদুর মুছে গেছে সেদিন। সেই শোক ও রক্তক্ষয়ী বাস্তবতাকে সামনে এনে ভারতীয় সেনাবাহিনী এই অভিযানের নামকরণ করেছে ‘সিঁদুর’। এটি কেবল প্রতিশোধের প্রতীক নয়, বরং দেশের নারীদের অপমানের জবাবও।
সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নাম ভারতের সাংস্কৃতিক পরিচয়, প্রতিশোধ স্পৃহা ও জাতীয় গৌরবের বহিঃপ্রকাশ।
‘সিঁদুর’ শব্দটি ঐতিহাসিকভাবে সিন্ধু নদীর সঙ্গেও যুক্ত। এই নদী নিয়েই ভারত-পাকিস্তানের ইন্দাস পাানচুক্তি, যা বর্তমানে ভারতের পুনর্বিবেচনার আওতায় এসেছে। ফলে ‘সিঁদুর’ নামটি শুধু আবেগ নয়, বরং পাকিস্তানের প্রতি এক সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বার্তাও বহন করে।
ভারত জানিয়েছে, এই অভিযান ছিল নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক ও উত্তেজনা এড়ানোর মতো পরিমিত প্রতিক্রিয়া। পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়নি। কিন্তু পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, বাহাওয়ালপুর ও মুজাফফরাবাদে হামলায় বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে- যার সত্যতা নিশ্চিত হয়নি।
এই অভিযানের পর আন্তর্জাতিক মহল, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ দুই দেশকে সংযম প্রদর্শন ও সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে। ইরান মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দিয়েছে।
ভারতীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি আবেগঘন, কৌশলগত ও সাংস্কৃতিক বার্তা। এটি একদিকে শহীদদের স্ত্রীদের সম্মান জানায়, অন্যদিকে শত্রুকে স্পষ্ট করে দেয় যে, ভারত তার নাগরিকদের হত্যার জবাব দিতে পিছপা নয়।
তবে, এই ঘটনার পর উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা কতটা বজায় থাকবে, তা সময়ই বলবে।