ভারত-পাকিস্তান দুই দেশকেই চিনি: ট্রাম্প
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ১১:৪৪ AM , আপডেট: ০৮ মে ২০২৫, ১১:৪৪ AM

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা এখন যুদ্ধের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। দুই সপ্তাহ ধরে চলা পাল্টাপাল্টি হুমকির পর এবার বাস্তবে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি এলাকায় বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত।
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞায় ফুঁসছে দেশটির নেতৃত্ব। ইতোমধ্যে ভারতকে জবাব দিতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সেনাবাহিনীকে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি অনুমতি দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ভারতকে এই হামলার চরম মূল্য চুকাতে হবে।
এদিকে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের যুদ্ধের মতো এমন চূড়ান্ত পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হওয়ার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগে দুপক্ষকেই শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ বিশ্বনেতারা। মূলত, বিবাদমান এ দুদেশেই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র বলে পরিচিত। এ অবস্থায় ভারত-পাকিস্তান চলমান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
চলমান অস্থিরতার মধ্যে স্পষ্টভাবে কোনোপক্ষে না গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দুই দেশকেই ভালোভাবে চিনি। আমি চাই তারা এই সংঘাত বন্ধ করুক।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিয়ে সংক্ষেপে মন্তব্য করেছেন।
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, দুই দেশকেই ভালোভাবে চিনি। আমি চাই তারা নিজেদের মধ্যে বিষয়গুলো মিটিয়ে নিক। আমি চাই তারা এই সংঘাত বন্ধ করুক।
ট্রাম্প আরও বলেন, আমি যদি কোনোভাবে সাহায্য করতে পারি, তাহলে অবশ্যই পাশে থাকব।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।
এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, রীতিমতো যুদ্ধের রূপ ধারণ করেছে যা এখন।
গত মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে অন্তত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে দাবি করছে পাকিস্তান।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে লজ্জাজনক বলে আখ্যায়িত করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এমনকি পারমাণবিক শক্তিধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ খুব দ্রুত শেষ হবে বলেও আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
তবে, বুধবার (৭ মে) সারাদিন যুদ্ধের উত্তাপ লক্ষ্য করা গেছে দুদেশের মধ্যে। সকাল থেকে কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি হামলার পর নিজেদের সামরিক বাহিনীকে হামলা জোরদারের অনুমোদন দিয়েছে ইসলামাবাদ। ভারতের হামলায় ঝরা প্রতি ফোঁটা রক্তের চরম বদলা নেওয়া হবে বলে ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।