মহানবী (সা.)-কে কটূক্তি

জুমার পর ভারতে ব্যাপক বিক্ষোভ

বিক্ষোভ
রাজধানী দিল্লীসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ  © ফাইল ছবি

ভারতের রাজধানী দিল্লীসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানা গেছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে নিয়ে দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপির দুই শীর্ষ নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদ ও অভিযুক্তদের দুই সপ্তাহ ফেরিয়ে গেলেও গ্রেপ্তার না করায় ক্ষুব্ধ মুসলমানরা এ বিক্ষোভ করে। খবর এনডিটিভি। 

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে দিল্লী জামে মসজিদসহ দেশটির বিভিন্ন রাজ্যের মসজিদ থেকে এ বিক্ষোভ শুরু হয়। সম্প্রতি এক টিভি শো'তে বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। পরে তার বক্তব্যকে সমর্থন করে টুইট করেন দিল্লী বিজেপির মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা নবীন কুমার জিন্দাল। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানায় দেশটির মুসলমানরা। নরেন্দ্র মোদি সরকারের ওপর ঘটনার কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানায় মুসলিম রাষ্ট্রগুলো। এক পর্যায়ে ঘরে বাইরে চাপের মুখে পড়ে দুই শীর্ষ নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার ও বরখাস্ত করে বিজেপি। মামলা করা হয় সাবেক দুই নেতার বিরুদ্ধে। 

এনডিটিভির খবরে বলা হয়, শুক্রবার জুমা নামাজের পর রাজধানীর দিল্লী জামে মসজিদে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা যায়। এ মসজিদটি ভারতে বড় মসজিদগুলোর একটি। বিক্ষোভকারীরা নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালের গ্রেপ্তার দাবি করেছে। তবে দিল্লী শাহী জামে মসজিদের ইমাম সংবাদ সংস্থা এএনআই'কে বলেন, আমরা কোন বিক্ষোভের ডাক দেয়নি। আমরা জানি না কারা বিক্ষোভ করছে। আমার মনে হয় তারা অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) তথা হায়দ্রাবাদের প্রভাবশালী রাজনীতিক আসাদউদ্দিন ওয়াইসির অনুসারী। আমারা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যদি তারা বিক্ষোভ করতে চায় সেটা তারা করতে পারে। কিন্তু কিন্তু আমরা তাদের সমর্থন করবো না। 

এএনআই'কে দিল্লী পুলিশ জানায়, বিজেপির বহিষ্কৃত দুই শীর্ষ নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদে মানুষ জামে মসজিদে বিক্ষোভ করে। পরে আমরা তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি বর্তমানে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। 

এদিকে উত্তর প্রদেশের শাহারানপুরে শত শত মানুষকে রাস্তায় বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এছাড়াও জুমার নামাজকে কেন্দ্র করে লখনৌ, কানপুর, ফিরোজাবাদে স্থানীয় পুলিশ নিরাপত্তা জোরদার করেছে। কারণ কানপুরে গত সপ্তাহে মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। যেখানে প্রায় ৪০জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদিকে আজকের বিক্ষোভে কোথায়ও কোন সহিংসতা হয়নি বলে জানিয়েছে দিল্লী ও উত্তর প্রদেশ পুলিশ। 

গতকাল দিল্লী পুলিশ জানায়, তারা অভিযুক্ত নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালসহ বিভাজন তৈরিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষকে উস্কে দিচ্ছে এমন বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। 

অবশ্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয় যখন বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশ ক্ষমতাসীনদের দুই শীর্ষ নেতার বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়অ জানায়। এবং উপসাগরীয় দেশগুলোতে ইন্ডিয়ান পণ্য বর্জনের ডাক আসে। আর বিজেপি নূপুর শর্মাকে বরখাস্ত ও নবীন কুমার জিন্দালকে বহিষ্কার করে এবং দলটির মুখপাত্রদের কথা বলার ক্ষেত্রে আরো সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়।