আসাম ও মেঘালয়ে বন্যায় নিহত ৪২, মেঘালয়ে মহাসড়ক বিচ্ছিন্ন

আসাম ও মেঘালয়ে বন্যায় নিহত ৪২, মেঘালয়ে মহাসড়ক বিচ্ছিন্ন
  © সংগৃহীত




ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশই খারাপের হচ্ছে। রাজ্য দুটিতে বন্যায় অন্তত ৪২ জন নিহত। বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ লাখে। খবর এনডিটিভির। 

রোববার এনডিটিভির খবরে বলা হয়, আসামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৩২টি জেলাসহ মোট ৩৩টি জেলা বন্যার ভয়াবহতার শিকার। এতে গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বন্যায় আক্রান্ত রাজ্যের ৩১ লাখ মানুষের মধ্যে দেড় লাখ মানুষ ৫১৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। সরকারি হিসেব বলছে চার হাজারের বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, সুবাশ্রীরি, মানসসহ প্রধান পাঁচটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করায় আসামের নিম্নাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

রাজ্যের পানি সম্পদ মন্ত্রী পীজুস হাজারিকা এনডিটিভিকে বলেন, পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে সর্বাত্মক সহায়তার চেষ্টা করছি। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছতে ক্ষণস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বাস শর্মার সঙ্গে কথা বলেছেন। এ সময় তিনি রাজ্যের দুযোর্গ কবলিত এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের সকল সহায়তার আশ্বাস দেন। চলতি সপ্তাহেই ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যায় ২৪জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যটিতে। সরকারি হিসেব বলছে, গত এপ্রিল থেকে সব মিলিয়ে রাজ্যের ৬২জন দুর্যোগে মারা গেছেন। 

এদিকে পার্শ্ববর্তী মেঘালয় রাজ্যে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে ভূমিধসের মতো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে রাজ্যের প্রধান দুটি জাতীয় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করেছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যের সোহরার রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম এলাকায় ১৯৯৮ এর পর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুধু চলতি সপ্তাহেই দুর্যোগে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছে। 
মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৪ লক্ষ রূপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

অন্যদিকে সংবাদ সংস্থা পিটিআই ত্রিপুরার এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলেছে, গত শুক্রবার থেকে লাগাতার বৃষ্টির কারণে রাজ্যের ১০ হাজারের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। তবে এখানে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ভূতি ধসের কারণে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় রাজ্যের সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার আহ্বান করেছে। সিকিমে ভারী বর্ষণের ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিবেশী অরুণাচল প্রদেশে সুবানসিরি নদীর পানিতে স্থানীয় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নির্মাণাধীন একটি বাঁধ ডুবে গেছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা পিটিআই। এছাড়া আসাম সরকার বন্যা এবং ভূমিধসের কারণে আটকে পড়া লোকদের জন্য গৌহাটি ও শিলচরের মধ্যে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে।


মন্তব্য