শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২২, ০২:৫৩ PM , আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২২, ০২:৫৩ PM

নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও গণআন্দোলনের মধ্যে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পূর্বে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার।
বুধবার (১৩ জুলাই) শ্রীলঙ্কান পার্লামেন্টের স্পিকারের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সম্প্রতি দেশ ছেড়ে সস্ত্রীক মালদ্বীপে পালিয়েছেন গোতাবায়া। বুধবার (১৩ জুলাই) সকালে মালদ্বীপে পৌঁছান তিনি। ভেলানা বিমানবন্দরে মালদ্বীপের সরকারি কর্মকর্তারা তাকে স্বাগত জানান।
পার্লামেন্টের স্পিকার বলেন, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে তাকে শ্রীলঙ্কার সংবিধানের ৩৭.১ অনুচ্ছেদে নিয়োগের কথা জানিয়েছেন। তবে রাজাপাকসের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো কথা বলা হয়নি।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সমস্ত ঘোষণাই পার্লামেন্টের স্পিকার এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এসেছে।
এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একটি সামরিক বিমানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে মালদ্বীপ পালিয়ে যান বলে জানান দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা।
বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ৭৩ বছর বয়সী গোতাবায়া, তার স্ত্রী ও এক দেহরক্ষীসহ চার যাত্রী নিয়ে সামরিক বিমান অ্যান্তোনভ–৩২ মঙ্গলবার মধ্যরাতে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মালদ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করে।
রাজাপাকসের পালিয়ে যাওয়ার মধ্যদিয়ে পারিবারটির কয়েক দশক ধরে শ্রীলঙ্কা শাসনের অবসান ঘটেছে। শনিবার (৯ জুলাই) জনতা বাসভবনে হামলার পর তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।
এর আগে ১৩ জুলাই (বুধবার) পদত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন গোতাবায়া। তার ভাই সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসেও দেশ ছেড়েছেন বলে সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
প্রেসিডেন্টের পালিয়ে যাওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী কলম্বোর প্রধান প্রতিবাদস্থল গল ফেস গ্রিনে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে শোরগোল ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের অপেক্ষায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ পার্কটিতে ভিড় করেছিল।
কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের প্রশাসনকে দায়ী করে দেশটির মানুষ। কয়েক মাস ধরে তারা প্রতিদিনের বিদ্যুৎ বিভ্রাট এবং জ্বালানি, খাদ্য ও ওষুধের মতো মৌলিক জিনিসের ঘাটতির কারণে ভুগছেন।
দেশটির প্রেসিডেন্ট থাকাকালে কাউকে বিচারের আওতায় আনা যায় না। নতুন প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পরে গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা এড়াতে পদত্যাগ করার আগে গোতাবায়া বিদেশে পালিয়ে গেলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিলেন তিনি। এছাড়া শ্রীলঙ্কান একটি প্রদেশে কারফিউও জারি করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে