রোহিঙ্গা গণহত্যা: আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের আপত্তি খারিজ

বিচার
  © সংগৃৃহীত

রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের অভিযোগে মামলা করেছিল পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। সেই মামলায় মিয়ানমারের প্রাথমিক আপত্তি আন্তর্জাতিক আদালত (আইসিজে) খারিজ করে দিয়েছেন। এতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মূল মামলার শুনানির পথ উন্মোচিত হলো।

শুক্রবার (২২ জুলাই) নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে) এ রায় দেন। আইসিজে সভাপতি বিচারক জোয়ান ই দোনোঘুই স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় রায় ঘোষণা করেন। 

আইসিজেতে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন গাম্বিয়ার তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আবু বকর তামবাদু। এতে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনেন তিনি। এ মামলার ওপর ওই বছরেরই ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর শুনানি হয়। ওই শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে অংশ নেন দেশটির তৎকালীন স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি অংশ নেন।

মামলায় প্রাথমিক শুনানির পর আইসিজে তাদের দাবিগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মনে করে এবং রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে নির্দেশ দেন।

২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলায় ৫০০-পৃষ্ঠারও বেশি একটি স্মারক দাখিল করে। যেখানে দেখানো হয়, কীভাবে তৎকালীন মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে। স্মারকটিতে গাম্বিয়ার মামলার সমর্থনে ৫ হাজার পৃষ্ঠারও বেশি সহায়ক উপাদান সংযুক্ত করা হয়।

মামলার দ্বিতীয় দফা শুনানি শুরু গত ২১ ফেব্রুয়ারি। তখন এই মামলা পরিচালনায় আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে মিয়ানমারের দায়ের করা আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

শুনানিতে অংশ নিয়ে মিয়ানমারের আইনজীবী বলেন, বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়া চলছে। গণহত্যার অভিযোগের বিষয়টিও যথেষ্ট তথ্য নির্ভর নয়। ফলে এ বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে শুনানির বাস্তবতা নেই।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মিয়ানমারে সামরিক দমন-পীড়নের ফলে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা প্রবেশ করে। জাতিসংঘ যাকে 'গণহত্যার অভিপ্রায়' বলে অভিহিত করেছে।