নির্বাচন জালিয়াতি মামলায় সুচির ৩ বছরের সাজা

আন্তর্জাতিক
অং সান সু চি  © ফাইল ফটো

নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চিকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে জান্তাশাসিত মিয়ানমারের একটি আদালত। মামলার কার্যক্রম সম্পর্কে ‘ওয়াকিবহাল একটি সূত্রের’ বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনে জালিয়াতি, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের হুমকি এবং আইন বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার এই শাস্তির রায় এসেছে।

ওই নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছিল সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি, যা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কর্তৃত্বকে ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছিল। রয়টার্স জানিয়েছে, সু চির সঙ্গে তার দলের নেতা, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্টকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে এ মামলায়।

গতবছর ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর সু চি ও তার দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে একের পর এক মামলা দেওয়া হয়।

তখন থেকেই বন্দি আছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মিয়ানমারের নেত্রী সু চি। ইতোমধ্যে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উসকানি দেওয়া, করোনাভাইরাসের বিধিনিষেধ ভঙ্গ, অবৈধভাবে ওয়াকিটকি ব্যবহার এবং ঘুষ নেওয়াসহ কয়েকটি অভিযোগে ইতোমধ্যে ১৭ বছরের বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ৭৬ বছর বয়সী এই নেত্রীকে।

মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোয় সামরিক জান্তার বিশেষ আদালতে সু চির রুদ্ধদ্বার বিচার হচ্ছে। গণমাধ্যমকে এই বিচার প্রক্রিয়ার খবর জানানো হচ্ছে না এবং সু চির আইনজীবীদেরও সংবাদ মাধ্যম এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সু চির এ বিচারকে ‘প্রহসন’ অ্যাখ্যা দিয়েছে। অন্যদিকে সামরিক জান্তা বলছে, ‘স্বাধীন আদালতে যথাযথ প্রক্রিয়াতেই’ এনএলডি নেত্রীর বিচার হচ্ছে।

সামরিক শাসনের বিরোধিতা করায় সু চি ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত বহু বছর গৃহবন্দি ছিলেন। ওই বছর মুক্তি পাওয়ার পর ২০১৫ সালের নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি বড় ধরনের জয় পায়।

২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে তার দল ফের জয় পায়। এর কয়েক সপ্তাহ পর নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। নির্বাচন কমিশন সামরিক বাহিনীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছিল। পরে স্বাধীন পর্যবেক্ষকরাও জানান, সেনাবাহিনীর ওই অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি।