সীমান্তে উত্তেজনা

কূটনৈতিকদের ব্রিফ ঢাকার, অনুপস্থিত চীন

   কূটনৈতিকদের ব্রিফ ঢাকার, অনুপস্থিত চীন
কূটনৈতিকদের ব্রিফ ঢাকার, অনুপস্থিত চীন  © সংগৃৃহীত

মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা নিয়ে বিদেশি মিশন ও দূতাবাসগুলোর রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ব্রিফ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এ আমন্ত্রণে সাড়া দেয়নি চীন। দেশটির কোন প্রতিনিধি ব্রিফে অংশ না নেওয়ায় প্রশ্ন তৈরি হয়েছে চীন কী চায়। পররাষ্ট্রনীতিতে বরাবরই মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত চীন। তাছাড়া দেশটির বর্তমান সেনা শাসককেও চীন টিকিয়ে রাখছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বৈঠকে রাশিয়া ও ভারত তাদের প্রতিনিধি পাঠালেও চীনের কোন প্রতিনিধি শনাক্ত করা যায়নি। এক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে অংশ নেয়নি মিয়ানমারের অতি ঘনিষ্ঠ ও মদদদাতা হিসেবে পরিচিত চীন।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বেলা সাড়ে ১০টায় আশিয়ান বহির্ভূত দেশ ও মিশনের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বৈঠক শুরু হয়। এতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খোরশেদ আলম ও সাউথ ইস্ট এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক নাজমুল হুদা।

বৈঠক শেষে ১২টার দিকে দূতরা পদ্মা ছাড়তে শুরু করেন। সাড়ে ১২টায় বৈঠকের বিষয় নিয়ে ব্রিফ করেন খোরশেদ আলম। তিনি জানান, বৈঠকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিশর, তুরস্ক, জাপানসহ প্রায় সবাই অংশ নেয়।

খোরশেদ আলম জানান, মিয়ানমারের উসকানিতে পা না দিয়ে বাংলাদেশ ধৈর্য্য পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছে এবং এই ইস্যুতে বাংলাদেশ জাতিসংঘে গেলে বাংলাদেশের উদ্যোগকে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন রাষ্ট্রদূতরা।

তিনি বলেন, ‘অব্যহত উসকানিতে মিয়ানমার যাতে ফায়দা নিতে না পারে, এ জন্য রাষ্ট্রদূতের অবহিত করেছে বাংলাদেশ।’

বৈঠকে দূতদের জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ এমন কোন কাজ করেনি, যে এদেশের নাগরিকরা নিজেদের জমিতে নিরাপদে বসবাস করতে পারবে না, গরু-বাছুর চরাতে পারবে না, ঘরে থাকতে পারবে না।

‘আভ্যন্তরীণ যে ধরনের গোলযোগই থাকুক, এ দেশের সীমানায়, মিয়ানমারের গোলা, মর্টার শেল আাসা অগ্রহণযোগ্য মনে করেছেন সব দেশের রাষ্ট্রদূতরা। তারা বলেছেন, তারা ঢাকার অবস্থান তাদের ক্যাপিটালে জানাবেন।’

ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ‘সীমান্তে পরিস্থিতি একই রকম আছে। ওপারে গোলাগুলি থামেনি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নেপিদো যে ব্যখ্যা দিয়েছে সেটিও গ্রহণযোগ্য নয়।’

বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াই চলছে মিয়ানমার সেনাদের। এই লড়াইয়ের মধ্যে মিয়ানমার সেনাদের ছোড়া বেশ কিছু মর্টার শেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে।

সবশেষ শুক্রবার রাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু কোনারপাড়া সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া চারটি মর্টার শেল এসে পড়ে। এতে শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক যুবক নিহত হন। আহত হন রোহিঙ্গা শিশুসহ পাঁচজন। বিষয়টির সমাধান খুঁজতে ঢাকা শুরু থেকেই কূটনৈতিক পথে হাঁটছে।