আইএমএফের পূর্বাভাস

বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমবে, মূল্যস্ফীতি বাড়বে

আইএফএম
  © লোগো

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরের চেয়ে কমে ৬ শতাংশে দাঁড়াবে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে। আইএমএফ চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপন করেছে। 

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত আইএমএফের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ প্রতিবেদনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে পূর্বাভাস রয়েছে। আইএমএফের এবারের প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু ‘জীবনযাত্রার ব্যয়ের সংকট সামাল দেওয়া’। আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভা শুরুর দিনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো।

সাময়িক হিসাবে বাংলাদেশে গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। গড় মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ৬ দশমিক ১  শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এটি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কিন্তু আইএমএফ মনে করছে, এবার মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়াবে ৯ দশমিক ১ শতাংশে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে বাংলাদেশে গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অবশ্য আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি হচ্ছে আগের বছরের নির্দিষ্ট কোনো মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের তুলনায় পরের বছর একই মাসে ওই সূচক যতটুকু বাড়ে তার শতকরা হার। অন্যদিকে ১২ মাসের পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতির গড় করে গত এক বছরের গড় পরিসংখ্যান বের করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড অতিমারির প্রভাব এবং চীনে অব্যাহত লকডাউনসহ অন্যান্য কারণে এ বছর এবং আগামী বছর বিশ্বব্যাপী আর্থিক পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। অন্যান্য মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলার আরো শক্তিশালী হতে পারে। মূল্যস্ফীতির ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়ে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধ, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির চাপ এবং চীনের অর্থনীতিতে ধীর গতি- এই তিনটি মূল চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্ব অর্থনীতি। চীনের মতো যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরো অঞ্চলের অর্থনীতিতেও ধীরগতি থাকবে। আইএমফের মতে, এ বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। আগামী বছর তা কমে ২ দশমিক ৭ শতাংশে নামবে। ২০০১ সালের পর যা সর্বনিম্ন। 

আইএমএফ বলেছে, মূল্যস্ফীতির চাপই সবচেয়ে নিকটবর্তী হুমকি, যা মানুষের প্রকৃত আয় কমিয়ে দেবে। ২০২২ সালে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। পরের বছর তা কমে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোকে এ জন্য সদা সতর্ক থাকতে হবে।


মন্তব্য