শাহবাজের মন্ত্রিসভায় নয়া আইন

অনলাইনে ঘৃণা ছড়ালে ৭ বছর কারাদণ্ড

অনলাইনে ঘৃণা ছড়ালে ৭ বছর কারাদণ্ড
অনলাইনে ঘৃণা ছড়ালে ৭ বছর কারাদণ্ড  © সংগৃৃহীত

এখন থেকে পাকিস্তানে অনলাইন বা কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরমে ঘৃণা ছড়ানো, হিংসা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিলে কিংবা এ সংক্রান্ত কন্টেন্ট শেয়ার করা হলে সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাবাসের সাজা খাটতে হবে। দেশটির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, এখন থেকে অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন প্ল্যাটফরম পর্যবেক্ষণ করবে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ)। কোনো ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যদি ঘৃণা, হিংসা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য, কন্টেন্ট কিংবা ভুয়া সংবাদ শেয়ারের অভিযোগ ওঠে, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সদস্যদের গ্রেপ্তারও করতে পারবে এফআইএ।

পাকিস্তানের দণ্ডবিধির (পেনাল কোড) ৫০৫ নাম্বার ধারা অনুযায়ী এফআইএ এই ক্ষমতার অধিকারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইনটিতে।

দেশটির সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদনপ্রাপ্ত এই আইনটি এখন উপস্থাপন করা হবে পার্লামেন্টে। সেখানে সরকারদলীয় আইনপ্রণেতাদের অনুমোদনের পর আইনের খসড়া পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে। তিনি স্বাক্ষর করার পরই দেশজুড়ে আইন হিসেবে চালু হবে এটি।

তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদিত কোনো আইনে পার্লামেন্টের সরকারদলীয় এমপিরা আপত্তি জানিয়েছেন— এমন নজির এখন পর্যন্ত পাকিস্তানে নেই।

এর আগে চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে সমধর্মী একটি আইনের খসড়ায় স্বাক্ষর করেছিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। সে সময় দেশটিতে ক্ষমতায় ছিল বর্তমান বিরোধী নেতা ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকার।

প্রিভেনশন অব ইলেকট্রনিক ক্রাইমস অ্যক্ট, (পিইসিএ) ২০১৬ নামের সেই আইনটিতে বলা হয়েছিল, সেনাবাহিনী, বিচারবিভাগসহ রাষ্ট্রীয় যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সমালোচনাকারী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে পুলিশ এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ৫ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

আইনটি পাশের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ শুরু হয়। বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিল পাকিস্তানের টেলিভিশন সংবাদমাধ্যমগুলোর সংস্থা্ পাকিস্তান ব্রডকাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিবিএ), দৈনিক পত্রিকাগুলোর সংস্থা অল পাকিস্তান নিউজপেপার্স সোসাইটি (এপিএনএস), পাকিস্তানের পত্রিকা সম্পাদকদের সংগঠন কাউন্সিল অব পাকিস্তান নিউজপেপার্স এডিটরস (সিপিএনই)সহ দেশটির সব সাংবাদিক সংগঠন।

এক পর্যায়ে আইনটি বাতিলে সাংবাদিকদের পক্ষে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করেন পাকিস্তানের জেষ্ঠ্য আইনজীবী মুনির এ মালিক। তারপর গত এপ্রিলে বিতর্কিত এই আইনটিকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে বাতিল করেন ইসলামাবাদের উচ্চ আদালত।