চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু

চাকরি
গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করেছে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ  © মোমেন্টস ফটো

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫, অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি, চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বঙ্গবন্ধু ল' কমপ্লেক্স স্থাপনের দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করেছে ‘চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ।’

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন সংগঠনটির সভাপতি শরিফুল হাসান শুভ।

সংবাদ সম্মেলনে আগামী এক সপ্তাহ ব্যাপী এক লক্ষ মানুষের কাছ থেকে স্বাক্ষর গ্রহণ করার কথা জানানো হয়। এছাড়া আগামীকাল শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি ঝটিকা মিছিল করার ঘোষণা দেন পরিষদের সভাপতি।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ রাসেলের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের সভাপতি শরিফুল হাসান শুভ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত চাকরি প্রার্থীরা বিগত প্রায় ১০ বছর যাবৎ সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে আসছে। নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর পাতা ৩২ এবং শিক্ষা দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে বলা আছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরীখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি হতে অবসরের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি এবং চাকরি শেষে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ স্বাভাবিক চাকরি প্রক্রিয়া ক্ষেত্রে অন্তরায়।

আরো পড়ুন: ১০ মার্চ ৪৫তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষা নেয়া কঠিনঃ পিএসসি

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশনে (বিসিএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে (বিজেএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর, সরকারি নার্সিং এ ৩৫ বছর এবং বেসরকারি স্কুল/কলেজে ৩৫ বছর। দুঃখজনক হলেও সত্যি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংস্থাগুলো তাদের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা সরকারি মানদন্ড অনুযায়ী ৩০ বছরকেই অনুসরণ করে। বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতিতে ১৮-৩৫ বছর বয়সীদের যুবক বলা হলেও ৩০ বছর হলেই তাদেরকে চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশেগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিভিন্ন রাজ্য ভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়স সীমা ৩৫-৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৩৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদশে এবং পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর।

‘কোভিড-১৯ মহামারীর সময় প্রায় সকল প্রকার চাকুরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি/পরীক্ষা বন্ধ ছিল। পৃথিবীর অনেক দেশ চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর বা তার বেশি থাকা সত্ত্বেও করোনা মহামারীর কারণে চাকুরিতে আবেদনের বয়সসীমা আরো ২-৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ৭১ বার বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবিটি উত্থাপিত হয়েছে এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এর সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি লিখিত ভাবে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য সুপারিশ করলেও কিন্তু তা এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই লক্ষ লক্ষ চাকরি প্রার্থীদের প্রাণের দাবি অনতিবিলম্বে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছর এবং অবসরে বয়সসীমা বৃদ্ধি করার দাবি করা হোক।’

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন সানোয়ারুল হক সনি, এ আর খোকন, মোস্তফা আমির ফয়সাল, জহিরুল ইসলাম জনি, মজিবুর রহমান মুন্না,আরেফিন হাই সৌরভ,ফারিহা মান্নান রিমা, মুক্তা সুলতানা, তানভীরুজ্জামান।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ