গরুর মাংস-মুরগি-ডিমের দাম কম, স্বস্তিতে ক্রেতারা
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:১২ PM , আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:১২ PM

হঠাৎ কমে গেছে গরুর মাংসের দাম। দোকানে সারিতে দাঁড়িয়ে অনেকে মাংস কিনছেন। তাতে কমেছে চাষের মাছ, ডিম ও মুরগির দাম। ঢাকার বাজারে গরুর মাংসের দাম বেশ কমেছে। প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হওয়া গরুর মাংস এখন ৬০০-৬৫০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ৫৫০ টাকা কেজিতেও গরুর মাংস কেনা যাচ্ছে। ফলে মধ্যবিত্ত ক্রেতা তো বটেই, অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষ দোকানে সারিতে দাঁড়িয়ে গরুর মাংস কিনছেন। দুই সপ্তাহ ধরে গরু মাংসের দামে এই পরিবর্তনের ফলে বাজারে কমতে শুরু করেছে চাষের মাছ ও ব্রয়লার মুরগির দামও।
রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ, শাহজাহানপুর ও রামপুরা বাজারের বেশির ভাগ দোকানে গরুর মাংস ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। কিছু দোকানে আরেকটু কমেও গরুর মাংস পাওয়া গেছে। যেসব দোকানে দাম কম দেখা গেছে, সেসব দোকানে ক্রেতার বেশ ভিড়। মানুষ গরুর মাংস আগের তুলনায় বেশি কেনায় চাষের মাছ ও ব্রয়লার মুরগির বেচাকেনা কমেছে। ফলে এই দুই পণ্যের দামও খানিকটা কমেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় চাষের তেলাপিয়া, পাঙাশ, রুই, কই ও শিংয়ের মতো মাছের দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। মাঝারি ও ছোট আকারের তেলাপিয়া ও পাঙাশ বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়। কিছু দোকানে পাঙাশ ১৮০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। চাষের কই মাছের দাম পড়ছে প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। আর শিংয়ের কেজি নেমে এসেছে ৩৫০ টাকায়। আকারে বড় হলে রাখা হচ্ছে ৪০০ টাকার মতো। কমেছে রুই মাছের দামও, মানভেদে চাষের রুইয়ের কেজি পড়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। তবে নদীর ও হাওরের মাছের দামে বড় পার্থক্য দেখা যায়নি।
খুচরা ডিম বিক্রেতা মো. রাজীব মিয়া বলেন, ‘ডিম এখন এই বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরায় প্রতি ডজন ডিম ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছি। কেউ বেশি ডিম নিতে চাইলে ডজন ১১০ টাকাও রাখা হচ্ছে।
অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১০ থেকে ২০ টাকা কমে অধিকাংশ বাজারে ১৭০ টাকায় নেমে এসেছে। আর সোনালি মুরগির দাম কমে হয়েছে প্রতি কেজি ২৮০ টাকা। দরদাম করলে কোনো কোনো দোকানি সোনালি মুরগির আরও কম রাখছেন। ভারত থেকে ডিম আমদানি পর ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম কমতির দিকে ছিল। মুরগির দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে এবার ডিমের দাম আরও কিছুটা কমেছে। এক ডজন বাদামি ডিম পাওয়া যাচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। আর সাদা রঙের ডিম ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। বেশি নিলে সাদা ডিম কেউ কেউ ১১০ টাকাও রাখছেন।
গরুর মাংস বিক্রেতারা জানিয়েছেন, রাজধানীর যেসব এলাকায় সীমিত আয়ের মানুষ বেশি থাকেন, সেসব এলাকায় গরুর মাংসের দাম বেশি কমেছে। গত মার্চে গরুর মাংসের দাম বেড়ে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায় উঠেছিল। তাতে গরুর মাংস সীমিত আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। বিক্রি কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরাও বিপাকে ছিলেন। এখন বেচাকেনা বেড়েছে কয়েক গুণ।
গরুর মাংসের দাম কমায় ক্রেতারা বেশ খুশি। এক ক্রেতা বলেন, ‘কোরবানির পর আর গরুর মাংস কেনা হয়নি। অনেকে কম দামে মাংস কিনেছেন শুনে আমিও এলাম। বাচ্চাকাচ্চারা অনেক দিন ধরে বলছিল। দাম না কমলে কেনা কষ্ট হতো।’
গরুর মাংসের বিক্রেতা বলেন, ‘আগে দিনে ২ থেকে ৩টি গরু বিক্রি করতেই কষ্ট হতো। এখন দিনে ১২ থেকে ১৫টি গরু জবাই দিতে হচ্ছে। বিক্রিতে বেশি চাপ হওয়ায় আমরা হাড়-মাংস একসঙ্গে করে দিচ্ছি। তারপরও সবাই কিনছেন। অনেকটা উৎসবের মতো বেচাবিক্রি হচ্ছে।’ খোরশেদ আলম জানালেন, প্রতি কেজি মাংস বিক্রিতে তাঁর লাভ আগের তুলনায় কমেছে, তবে ক্রেতারা গরুর মাংসের দোকানমুখী হওয়ার কারণে তিনি ব্যবসার ভালো সম্ভাবনা দেখছেন।