চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অনশনে গণপূর্ত অধিদপ্তরের দেড় হাজার কর্মচারী

অনশন
কর্মসূচি  © টিবিএম ফটো

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনের নেমেছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের দেড় হাজারেরও অধিক কর্মচারী। দৈনিক ভাউচার ভিত্তিক দীর্ঘ ২০/২৫ বছর বা তার অধিক সময় যাবৎ গণপূর্ত অধিদপ্তরে কর্মরত এসব কর্মচারীরা তাদের দাবি আদায়ে প্রধানন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদানসহ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন।

আজ বুধবার দুপুরে থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন অনশনরত এসব কর্মচারীরা।  

জানা গেছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরাধীন দৈনিক ভাউচার ভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে অন্তত ১ হাজার ৫১৭ জন কর্মচারী দীর্ঘ ২০-২৫ বছর বা তার অধিক সময় যাবৎ সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। কিন্তু তাদেরকে দৈনিক হারে যে পরিমাণ পারিশ্রমিক দেয়া হয়, তাহা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। যা দিয়ে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে খুবই মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়।

তাদের সহকর্মী কেউ মারা গেলে চাঁদা তুলে তাঁর দাফন কার্য সম্পূর্ণ করতে হয়। অর্থের অভাবে তাদের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। অসুস্থ হলে চিকিৎসার অভাবে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হয়। হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেও তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য নিয়ে বেঁচে আছে।

তবে দৈনিক ভাউচার ভিত্তিক মজুরিতে নিয়োগকৃত এসব কর্মচারীদের কাজের মেয়াদ ১৩ বছর পূর্ণ হলে তাঁকে রাজস্ব খাতে আনয়নের নীতিমালা রয়েছে। যদিও হাইকোর্টের রায়ের আলোকে ১ হাজার ৫১৭ জন কর্মচারীর মধ্যে থেকে ৪২ জনকে চাকরিতে স্থায়ীকরণ করা হয়েছে। সেই আলোকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোঃ আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত ২৫.০০.০০০০.০১৪.১১.০০৮.১৯.৪৮৪নং স্মারক মূলে ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর তারিখে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর কর্মচারীদের তথ্যাবলী সংক্রান্ত নামের তালিকা চেয়ে চিঠি প্রেরণ করেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর পেরিয়ে গেলেও গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে সেই চিঠির কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। বরং পান থেকে চুন খসলেই কর্মচারীদেরকে করা হয় নির্যাতন। ঘুমন্ত অবস্থাতেও চাকরি হারানোর ভয় তাদেরকে তাড়িয়ে বেড়াতো। তারা ন্যায্য অধিকারের কথাটুকু মুখফুটে বলতে পারতো না।

আন্দোলকারীরা জানায়, এ কারণে প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে দাবি-দাওয়া আদায়ের কথা জানিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে দুই বছরে পরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করলে অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়কে একটি ত্রুটিপূর্ণ তালিকা প্রেরণ করা হয়। কিন্তু ওই তালিকাটিও অন্তত ছয় মাস ধরে পড়ে আছে বড় বাবুদের কোন টেবিলের নিচে। এ কারণে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমকারী এসব কর্মচারীরা তাদের একদফা দাবি নিয়ে এখন অনশন কর্মসূচিতে বসেছে। তাদের দাবি, চাকুরীতে স্থায়ীকরণ না করা হলে তারা ঘরে ফিরে যাবে না।