হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়

এখন থেকে গাছ কাটতে লাগবে অনুমতি

গাছা কাটা
  © ফাইল ছবি

হাইকোর্ট গাছ কাটার বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, গাছ কাটতে এখন অনুমতি নিতে হবে। তবে গ্রাম এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ কাটতে অনুমতির প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছেন রিটের পক্ষের আইনজীবী।

মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) পরিবেশ সুরক্ষায় গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণের জন্য জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে। হাইকোর্ট আজ এই রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন। বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।

রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, তাকে সহায়তা করেন সঞ্জয় মণ্ডল ও সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. শফিকুর রহমান।

এ বিষয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘‘রায় অনুযায়ী, গাছ কাটতে এখন একটি কমিটির অনুমতি নিতে হবে। ঢাকা এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এই কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে সাত দিনের মধ্যে ঢাকায় কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে, যাতে কমিটিতে পরিবেশবিদ, বিশেষজ্ঞ, ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।’’

জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। জেলা কমিটি গঠনের জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে এবং উপজেলা কমিটি গঠনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) নেতৃত্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালত আরও উল্লেখ করেছে, দেশের তাপমাত্রা বাড়ছে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাছ কাটা হলে পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে, যা মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।

এছাড়া, আদালত সামাজিক বনায়ন বিধিমালায় সংশোধন করতে বলেছে, যাতে সামাজিক বনায়নের গাছ কাটার পরিবর্তে গাছের বাজার মূল্য নির্ধারণ করে উপকারভোগীদের দেওয়া যায়।

এক প্রশ্নে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানিয়েছেন, ‘‘সামাজিক বনায়নের গাছ কাটার অনুমতি নেই, তবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যেকোনো গাছ কাটতে কমিটির অনুমতি নিতে হবে। তবে গ্রামাঞ্চলে ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছ কাটতে অনুমতি লাগবে না।’’