শীতকালে বেশি ঘুমানো উচিত: ঘুম বিভাগের পরিচালক

লাইফ স্টাইল
  © ফাইল ফটো

শীতে বেশি ঘুমানো নিয়ে আবার অনেকের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে। কেউ বলেন শীতে বেশি ঘুমানো ভালো না, আবার কেউ পাল্টা দীর্ঘক্ষণ ঘুমিয়ে থাকার পক্ষে যুক্তি দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এছাড়াও আমেরিকার ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুম বিভাগের পরিচালক বেথ মালো বলেছেন, শীতে ঘুমিয়ে পড়া সহজ হোক আর ঘুম বেশি হোক, এটা আমাদের আলিঙ্গন করা উচিত। আমাদের উচিত এই সংকেত মেনে নেয়া এবং অতিরিক্ত ঘুমানো উচিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ শীতে বেশি ঘুমিয়ে থাকেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋতুর সঙ্গে তাদের ঘুমের পরিমাণে পরিবর্তন হওয়ার কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ নেই। ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট এবং আমেরিকান একাডেমি অব স্লিপ মেডিসিনের মুখপাত্র জেনিফার মার্টিন বলেছেন, ঘুমের জন্য মানবদেহের অভ্যন্তরীণ জৈবিক প্রয়োজনীয়তা বেশি ধ্রুবক। তবে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে (শীতকাল) অন্য সময়ের থেকে তুলনামূলক ঘুমানো সহজ।

শীতকালে সবাই গরম পোশাক পরে থাকেন। এমনকি ঘুমের সময়ও কমতি থাকে না উষ্ণতার। এ সময় শুয়ে থাকলে তো কেউ কেউ বিছানা ছেড়ে উঠতে চান না। লেপ, কম্বল ও অন্যান্য গরম কাপড় বা পোশাকের জন্য শীতে স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি ঘুমিয়ে থাকা হয় অনেকের। তবে কর্মজীবী মানুষের বিষয় ভিন্ন।

মানবদেহের সার্কাডিয়ান ছন্দ প্রায় ২৪ ঘণ্টা চক্র চালায় এবং কখন ঘুম থেকে উঠতে হবে, খেতে হবে এবং ঘুমাতে যেতে হবে―সেটি নির্ধারণ হয় সূর্যের আলো দেখতে পাওয়ার পরিমাণের ওপর। এছাড়া শীতে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মের থেকে তুলনামূলক কম দিনের আলো পাওয়া যায়। আর সূর্য ডোবার পর মানবদেহে মেলাটোনিন হরমোন তৈরি হয়। এই হরমোন ঘুমের উন্নতিতে সহায়তা করে এবং শীতের সময় কিছু মানুষের ঘুমিয়ে পড়া আরও সহজ করে তুলতে পারে।

এছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু লোকের ক্ষেত্রে শীতে দ্রুত চোখের পাতা নড়াচড়া (REM) হয়। ফলে তাদের ঘুম পাওয়া সহজ হয়। প্রায় ৩০০ ব্যক্তির ওপর ২০২৩ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের দ্রুত চোখের পাতা নড়াচড়া অন্য সময়ের থেকে শীতে প্রায় ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় হয়। ফলে ঘুমিয়ে পড়েন তারা। এতে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম বেশি হয় তাদের।

যেসব বিষয় জানা জরুরি: গবেষণায় দেখা গেছে, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ডিমেনশিয়া, বিষণ্নতা, ডায়াবেটিস, হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং সার্বিকভাবে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আপনার পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে কিনা, সেটি জানার জন্য দিনের বেলা কেমন অনুভব করেন সেটি পরীক্ষা করা উচিত।


মন্তব্য