ডিজিটাল থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:০৬ PM , আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:৪৮ PM

ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে এবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২ এর উদ্বোধনী ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালে আমরা লক্ষ্য স্থির করে ছিলাম, আমরা সেটা করেছি। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করব। যদিও করোনাভাইরাসের সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, আমেরিকা প্রদত্ত স্যাংশন, ইউরোপের স্যাংশন এবং কাউন্টার স্যাংশান, যার ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। গ্রেট ব্রিটেনের মতো উন্নত দেশও নিজেদের অর্থনৈতিক মন্দা দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। আল্লাহর রহমতে এখনও আমরা আমাদের অথনৈতিক চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, এই শীতের মধ্যে বিদ্যুৎ পাচ্ছে না, শীতের দেশ, যেখানে হিটার না জ্বালিয়ে এক মুহূর্ত থাকতে পারে না। আজকে তারা বিদ্যুৎ পায় না। এমনও অবস্থা আছে ইউরোপ, ইংল্যান্ড, আমেরিকার এমনও জায়গা আছে গোটা পরিবার একটা রুমে হিটার জ্বালিয়ে এক সঙ্গে থাকে, কারণ সেখানে বিদ্যুতের অভাব। কিছুদিন আমাদের অসুবিধা হয়েছে, তারপর আমরা দিয়ে যাচ্ছি। একেবারে বঞ্চিত কাউকে করিনি। আমরা ব্যবস্থা করতে পেরেছি, সক্ষমতা এসেছে। যে কারণে আমরা বাংলাদেশকে আগামী ৪১ সালের উন্নক দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। সেই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা চলে যাব। স্মার্ট বাংলাদেশ করার জন্য চারটি ভিত্তি ঠিক করা হয়েছে। আমাদের প্রত্যকটা সিটিজেন প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে, স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি অর্থাৎ ইকোনমির সমস্ত কার্যক্রম আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে করব। স্মার্ট গর্ভমেন্ট, ইতোমধ্যে আমরা অনেকটাই করে ফেলেছি এবং আমাদের সমস্ত সমাজটাই হবে স্মার্ট সোসাইটি।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের প্রযুক্তিতে বিপ্লব ঘটানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বলেছিলাম প্রত্যেকটি ফাইল কম্পিউটারে আসতে হবে। এর আগে কম্পিউটার কেউ ব্যবহার করতো না।
’৯২ সালে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করায় বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এতে আন্তর্জাতিক লিংক থেকে বাংলাদেশ দূরে সরে ছিলো। ৯২ সালে আমরা একটা সুযোগ পেয়েছিলাম সাবমেরিন ক্যাবল যখন ভারতসহ আশপাশের দেশগুলো সংযুক্ত হয়। বাংলাদেশ সেই সুযোগ পেলেও খালেদা জিয়া নেয়নি। এতে সব তথ্য নাকি বিদেশি চলে যাবে। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হলো বাংলাদেশ।
সরকার নেদারল্যান্ডস থেকে দশ হাজার কম্পিউটার আমদানির চুক্তি বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে বাতিল করে দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপের নামে নেদারল্যান্ডের একটি কোম্পানির শুধু নাম মিলে যাওয়ায় সেই চুক্তি বাতিল করে খালেদা জিয়া। এতে দেশের প্রায় ৬২ কোটি টাকা গচ্চা যায়।
বাংলাদেশে প্রযুক্তিতে যে বিপ্লব এবং ব্যাপক ব্যবহার হয়েছে, সেজন্য নিজের ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিকল্পনা ও ভূমিকার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, জয়ের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা কম্পিটারের আমদানির ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করার কারণে ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। জয়ের পরামর্শে জিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করি এবং বাস্তবায়ন করি।
নিজেও ছেলের কাছ থেকে কম্পিউটারে জ্ঞান আহরন এবং শিখেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আজকে সারাদেশে ব্রডব্যান্ড সেবা পৌঁছে গেছে। জয় পরামর্শ না দিলে এটা করা সম্ভব হতো না। ডিজিটাল বাংলাদেশে আজ প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কানেক্টেভিটি আছে। ডিজটাল বাংলাদেশ গড়ার কারণে করোনাকালীন সবকিছু চলেছে। মানুষ কাজ করতে পেরেছে।
এ সময় ফ্রিল্যান্সাররা যাতে তাদের সার্বিক কর্মকাণ্ড ও কাজ নিবিড় ও ঝামেলাহীনভাবে করতে পারেন সেজন্য সরকারের সহায়ক বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তার সরকার ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম কমিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার আরও সহজলভ্য করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।