বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে আরও ২ প্রাণীর মৃত্যু

গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গববন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে গত ২১ ডিসেম্বর শেল বাহাদুর নামে হাতির মৃত্যু হয়। শেল বাহাদুরের মৃত্যুর খবর জানতে গিয়ে সিংহ ও ওয়াইল্ডবিস্টের মৃত্যুর তথ্য বেরিয়ে আসে। প্রাণীর মৃত্যুর বিষয়টি সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ গোপন রাখার চেষ্টা করেছিল।

গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি মারা যায় আফ্রিকার প্রাণী লেমুর। ওই বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১টি জেব্রা, একটি বাঘ ও সিংহ মারা যায়। প্রাণীগুলোর মৃত্যুর খবর তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। সর্বশেষ হাতি মৃত্যুর ঘটনাটিও সাফারি পার্কের কর্মকর্তারা গোপন রাখার চেষ্টা করেন। সোমবার (২ জানুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত সিংহ ও ব্লু ওয়াইল্ডবিস্টের মৃত্যুর বিষয়টিও গোপন রাখেন সাফারি পার্কের কর্মকর্তারা। কিন্তু থানায় হাতি মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে ১৬ ডিসেম্বর একটি সিংহ ও ১৯ নভেম্বর একটি ব্লু ওয়াইল্ডবিস্টও এর মৃত্যুর তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে সাফারি পার্ক প্রকল্প পরিচালক মো. ইমরান হাসান বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় একটি মাদী সিংহ মারা যায়। আর মাদীটি এবং ওয়াইল্ডবিস্টের মৃত্যু হয় বার্ধক্যজনিত কারণে।

তিনি আরও জানান, মারা যাওয়ার পর ওই দিনই মৃত সিংহীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী চিকিৎসালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত করেন। মৃত সিংহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিভিন্ন নমুনা রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রসহ বিভিন্ন পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিকভাবে সিংহীটির মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকে হয়েছে। তবে পরীক্ষাগারে পাঠানো নমুনার প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মো. ইমরান হাসান জানান, সিংহ মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠন করা তদন্ত কমিটি প্রয়োজনে আরও  দুই সদস্যকে যুক্ত করে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। 

সাফারি পার্কের সূত্রে জানা যায়, সিংহটি ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছিল। এর বয়স হয়েছিল ১৪ বছর। এটি মারা যাওয়ায় এখন সাফারি পার্কে সিংহী আছে মাত্র একটি আর সিংহ আছে সাতটি।

তবে বার্ধক্যজনিত কারণে ওয়াইল্ডবিস্টের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও সেটি অসুস্থতায় ভুগে মারা গেছে বলে জানা গেছে।