বুয়েট ছাত্র ফারদিনের মৃত্যু
বুশরার জামিন আদেশ আজ
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:১৩ AM , আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:১৭ AM

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য রোববার (৮ জানুয়ারি) দিন ধার্য রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে শুনানি শেষে জামিন আদেশের এ দিন ধার্য করা হয়।
ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবেদনে পুলিশ বিষয়টি আত্মহত্যা বললেও আমাতুল্লাহ বুশরা এখনো কারাগারে রয়েছেন।
বুশরার আইনজীবী বলছেন, র্যাব ও পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন। তাই বুশরা জামিন পাওয়ার যোগ্য।
এ বিষয়ে বুশরার আইনজীবী এ কে এম হাবিবুর রহমান বলেন, যেহেতু তার বিরুদ্ধে এখনো কোনো অভিযোগ আনা হয়নি, সেহেতু বুশরা জামিন পাওয়ার যোগ্য। পুলিশ ও র্যাব সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছে, ফারদিন আত্মহত্যা করেছে। যেহেতু সে আত্মহত্যা করেছে, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে আর কোনো অভিযোগ থাকার কথা না।
তবে ফারদিনের আইনজীবী শামীম হাসান বলছেন, জামিন দেয়া হলে তদন্ত কাজে প্রভাব ফেলতে পারে।
তিনি বলেন, মামলাটি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি তাকে (বুশরা) জামিন দেয়া হয়, তবে মামলার তদন্ত কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
নিখোঁজের তিন দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গত ৭ নভেম্বর ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। রাজধানীর রামপুরা থেকে নিখোঁজ হন পরশ। এরপর তার বাবা রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ফারদিন নূর পরশ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং ক্লাবেরও যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন তিনি। তিন ভাইয়ের মধ্যে পরশ সবার বড়।
তাদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার কুতুবপুর ইউনিয়নের নয়ামাটি এলাকায়। তবে গত দুবছর ধরে তারা সপরিবারে রাজধানীর ডেমরা থানার শান্তিবাগ কোনাপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করছিলেন। পরশের বাবা কাজী নূর উদ্দিন রানা একটি ইংরেজি পত্রিকায় দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন।
ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনায় ১০ নভেম্বর ভোর ৩টার দিকে বুশরার নাম উল্লেখসহ কয়েকজনকে আসামি করে পরশের বাবা কাজী নূর উদ্দিন মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই তাকে গ্রেফতার করা হয়। ৫ দিন রিমান্ডের পর এখন তিনি কারাগারে আছেন। অথচ ডিবি জানিয়েছে, ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনায় বুশরার কোনো সম্পৃক্ততা তারা পায়নি।
ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তভার ডিবি পুলিশের ওপর ন্যস্ত করা হয়। তদন্তকারী সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পক্ষ থেকে প্রথমে জানানো হয়, মাদক কিনতে গিয়ে মাদক গ্যাংয়ের হাতে খুন হয় ফারদিন। আবার বলা হয়েছে, চনপাড়া বস্তিতে খুন হয়েছেন ফারদিন।
একই দাবি করা হয় ছায়াতদন্তকারী সংস্থা র্যাবের পক্ষ থেকেও। গত ১৫ নভেম্বর র্যাব দাবি করে, ফারদিন হত্যায় জড়িত চনপাড়া বস্তির মাদক গ্যাং রায়হান গ্রুপ। এতে হত্যায় জড়িত থাকা ১০-১২ জনকে শনাক্ত করার কথাও বলা হয়।
গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়, মাদক কিনতে গিয়েই চনপাড়া বস্তিতে খুন হয়েছেন ফারদিন। খুন করার পর সাদা প্রাইভেটকারে মরদেহ বের করা হয় বস্তি থেকে। পরে ফেলে দেয়া হয় শীতলক্ষ্যা নদীতে। একাধিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হয় এমন সংবাদ। আর এসব সংবাদের সোর্স হিসেবে উল্লেখ করা হয় গোপন সূত্র।
পরে অবশ্য ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, খুন করা হয়নি, ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন।