এদেশের রাজনীতিতে আমরা দেয়াল তুলব না, সেতু নির্মাণ করব: ওবায়দুল কাদের
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:১২ PM , আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:১২ PM

হিন্দুধর্মাবলম্বীদের উৎসব সরস্বতীপূজা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও নিজের পক্ষ থেকে ভক্ত, অনুরাগী ও পূজারি- সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে ‘স্যালুট’ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সবার অভিন্ন শত্রু সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে রুখতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর সীমিত পরিসরে জগন্নাথ হলে সরস্বতীপূজা হলেও এবার বড় করে পূজা হচ্ছে। জগন্নাথ হলের উপাসনালয়ে করা হয়েছে কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপ, আর মাঠে বসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ-ইনস্টিটিউটগুলোর ৭৮টি মণ্ডপ। হল প্রাঙ্গণে জমেছে রকমারি পণ্য ও খাবারের পসরা। পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে জগন্নাথ হলে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জগন্নাথ হলের উপাসনালয়ের কেন্দ্রীয় মণ্ডপ পরিদর্শন করেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আজ বিদ্যাদেবী সরস্বতীর পদতলে অর্চনা দেওয়ার দিন। ভক্ত, অনুরাগী ও পূজারি—সবাইকে আমি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও আমার নিজের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছাসিক্ত অভিনন্দন জানাই। আজকের এদিনে বিদ্যার দেবীকে স্যালুট জানাই। আমাদের সবার অভিন্ন শত্রু সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ। সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আমি বলব, এখন আমাদের নাম্বার ওয়ান এনিমি, প্রধানতম শত্রু হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদকে রুখতে হবে।’
জগন্নাথ হল তাঁর জীবনের এক স্মৃতিময় অধ্যায় রচনা করেছে বলে জানান তিনি। স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে জগন্নাথ হল থেকেই আমাদের সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। সেদিন সেই প্রতিবাদের মিছিলে আমরা একঝাঁক তরুণ শামিল হয়েছিলাম। জগন্নাথ হল থেকে প্রস্তুতি নিয়েই মধুর ক্যানটিনের সামনে আমরা প্রথম প্রতিবাদ করেছিলাম। এরপর ৪ নভেম্বর বটতলা থেকে আমরা গণমিছিল ও শোক শোভাযাত্রা বের করেছিলাম, যেটার গন্তব্য ছিল বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়ি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর জিয়াউর রহমানের কারাগারে আড়াই বছর জেল খেটেছি। ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক অত্যাচার করা হয়েছিল। তখন রাতে ছিল কারফিউ, দিনে বহুদলীয় গণতন্ত্র। জগন্নাথ হল থেকেই আমি, স্বপন সাহা ও নিম চন্দ্র ভৌমিক গ্রেপ্তার হয়েছিলাম। ফরিদপুরের কারাগারে থাকা অবস্থায় এক রাতে খবর পেয়েছিলাম যে আমাকে ছাত্রলীগের সম্মেলনে সভাপতি মনোনীত করা হয়েছে। আমি গর্বিত যে আমিই প্রথম কারাগারে থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছিলাম।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে এখানে এখন আর অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই, যা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে করেছিল অস্থিতিশীল। সেই ক্যাম্পাস এখন শান্তিপূর্ণ। এখানে আমরা সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের আগ্রাসন চাই না। দেশের রাজনীতিতে আমরা সেতুবন্ধন রচনা করব। এ দেশের রাজনীতিতে আমরা ওয়াল (দেয়াল) তুলব না, সেতু নির্মাণ করব—এটাই হোক আমাদের শপথ। শেখ হাসিনা সেই সত্য-সুন্দরের অভিসারী। আসুন, আমরা শেখ হাসিনার রূপকল্প ২০৪১ অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কুশীলব-কারিগর হই। যার যার অঙ্গন থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করি, তাঁর হাতকে শক্তিশালী করি, অসুরের বিরুদ্ধে সুরের ঝঙ্কার তুলি, অশান্তির বিরুদ্ধে শান্তির পতাকা উড্ডীন করি।’
জগন্নাথ হলের কেন্দ্রীয় পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ও নির্বাহী সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু, জগন্নাথ হল শাখার সভাপতি কাজল দাস, সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণ প্রমুখ ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছিলেন। সেখানে আরও বক্তব্য দেন জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ মিহির লাল সাহা।