সাজানো প্রতিবেদনের অভিযোগের মামলায় প্রথম আলোর সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান  © ফাইল ফটো

সাজানো প্রতিবেদনের অভিযোগের মামলায় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বুধবার (২৯ মার্চ) সচিবালয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে একজন গণমাধ্যম কর্মীর বিচারের সুযোগ থাকলেও শামসুজ্জামান শামসকে কেন রাতে তুলে নিতে হলো জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আইন নিজস্ব গতিতে চলে। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রসহ সবই চলে। কেউ যদি সংক্ষুব্ধ হয়ে বিচার চায়, কিংবা সংক্ষুব্ধ হয়ে থানায় মামলা করে, সেই অনুযায়ী পুলিশ ব্যবস্থা নিতেই পারে। আমি যতটুকু জানি, একটা মামলা রুজু হয়েছে। সেই জন্যই সিআইডি...।'

তবে, মামলাটি কে বা কারা করেছে সে বিষয়ে 'সুনিশ্চিতভাবে' জানাতে 'আরেকটু সময় লাগবে' বলে জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা যেভাবে বলছেন, আমি পরিষ্কার করে এর উত্তর দিতে পারছি না। কারণ, আমার কাছে সব রিপোর্টগুলো এখনো আসেনি। আমি বিভিন্নভাবে যতটুকু অবগত হয়েছি, এই মামলাকে কেন্দ্র করে, খুব সম্ভবত কিছু একটা ঘটনা ঘটেছে, আমি এখনো পরিষ্কার নই। আমি পরিষ্কার হয়ে আপনাদের জানাতে পারব। তবে প্রথম আলোর সাংবাদিক সাহেব যে সংবাদ করেছেন, এটা সঠিক ছিল না।'

'আমরা মনে করি, স্বাধীনতা দিবসে আমরা এতদূর এগোনোর পরে এই ধরনের একটা ভুয়া নিউজ যদি কেউ দেয়, যে কেউ সংক্ষুব্ধ হতে পারে,' যোগ করেন তিনি।

শামসুজ্জামান যে প্রতিবেদন করেছেন সেটি নিয়ে 'রাষ্ট্রের আপত্তি আছে' বলে জানানো হয়েছিল তাকে তুলে নেওয়ার সময়—উল্লেখ করলে মন্ত্রী বলেন, 'রাষ্ট্রের আপত্তি নয়, একটা মামলা হয়েছে।'

প্রসঙ্গত, প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানানো হয়, শামসুজ্জামানকে তাঁর বাসা থেকে বুধবার (২৯ মার্চ) ভোর চারটার দিকে সিআইডির পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। সিআইডির পরিচয় দেওয়া ব্যক্তিরা সাধারণ পোশাকে ছিলেন। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বাসা সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে আমবাগান এলাকায়। তবে স্থানীয় পুলিশ ও সিআইডির ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।

স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ দুজন প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার ভোর ৪টার দিকে ৩টি গাড়িতে প্রায় ১৪–১৫ জন শামসুজ্জামানের বাসার সামনে যান। তাঁদের সাত থেকে আটজন বাসায় ঢোকেন। একজন শামসুজ্জামানের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তাঁর ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দুটি মুঠোফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক নিয়ে যান। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ওই ব্যক্তিরা শামসুজ্জামানকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় যান।

প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বটতলার নুরজাহান হোটেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন, একজন নিরাপত্তাপ্রহরী, শামসুজ্জামানসহ তাঁকে আটককারীরা সাহ্‌রি খান।

তুলে নেওয়ার সময় ওই বাড়ির মালিককে ডাকেন সিআইডি পরিচয়ধারী ব্যক্তিরা। তাঁরা বাড়ির মালিককে বলেন, শামসুজ্জামানের করা একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রের আপত্তি আছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে নেওয়া হচ্ছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ