দেশের সড়কগুলো যেন মৃত্যুর মিছিল, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ২০

সড়ক দুর্ঘটনা
  © ফাইল ছবি

দেশের সড়কগুলোতে কোনোভাবেই থামছে না মৃত্যুর মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২০ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২৭ জন।

গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘটে এসব দুর্ঘটনা। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতাল এবং পরিবারের কাছ হস্তান্তর করেছে।

এবার কোরবানির ঈদের ছুটিতে সারাদেশে ২৭৭ টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৯৯ জন প্রাণ হারিয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫৪৪ জন।

সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, দেশে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ৫শ মানুষের মৃত্যু হয় বিভিন্ন অসুস্থতাসহ নানা ঘটনা দুর্ঘটনায়।  সেখানে ৬৫ ভাগ বিভিন্ন অসংক্রামক ব্যাধিতে মারা যান। ২৪ ভাগ মানুষ মারা যান বার্ধক্যজনিত কারণে। যা স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মানা হলেও,সড়ক দুর্ঘটনার কারণে অস্বাভাবিক মৃত্যুতে শঙ্কা বাড়ছে নাগরিক জীবনে। সড়কের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্তারাও উদ্বিগ্ন এমন পরিস্থিতিতে।কারণ দেশে ঈদ পূজার মত উৎসব পার্বণে বাড়ে সড়ক দুর্ঘটনা।

যদিও এবারের ঈদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও পরিবহন ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত হয়েছে।বর্তমান সরকারের বিগত ১৪ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো ছিল। ঈদের ছুটি ১দিন বাড়ানোর সুফল মিলেছে। দেশে ঈদ-যাত্রায় মোট যাতায়াতের প্রায় ০৮ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরদারির কারণে এবারের ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে। কিছু কিছু সড়কের অবস্থা ভালো হওয়ায় এই সকল রুটে ভোগান্তি কমার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, প্রাণহানি ৩৩ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে।

তবে, এত কিছুর পরেও পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে যাতায়াতে দেশের সড়ক মহাসড়কে ২৭৭টি দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত ও ৫৪৪ জন আহত হয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। যেখানে সড়ক, রেল ও নৌ পথে সম্মিলিতভাবে ৩১২টি দুর্ঘটনায় ৩৪০ নিহত ও ৫৬৯ জন আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। পরিকল্পনার গলদের কারণে উত্তরাঞ্চলের পথে যানজটের ভোগান্তির পাশাপাশি কিছু কিছু রুটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হলেও কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতো দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলেও অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন বিশ্লেষণে।