এক্সপ্রেসওয়েতে ২-৩ চাকার বাহন নিষিদ্ধ, বাইকারদের ক্ষোভ

এক্সপ্রেসওয়ে
  © ফাইল ছবি

বহুল প্রতীক্ষিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম যাত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী টোল দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েটি পার হন।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ উড়াল পথের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে দুই ও তিন চাকার বাহন। এ কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজধানীর মোটরসাইকেল চলকরা।

তারা বলছেন, অন্তত মোটরসাইকেল চালকদের জন্য আলাদা একটি লেন করে দিলে ভালো হয়। এতে নিয়ম মেনে তারা বাইক চালাতে পারবেন। যানজটে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হবে না।

উত্তরার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, মোটরসাইকেলে উত্তরা থেকে ফার্মগেট বা কারওয়ান বাজারের দিকে যেতে অন্তত দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। নতুন এ উড়াল সড়ক ঢাকাবাসীর জন্য আশীর্বাদ। তবে, মোটরসাইকেল চলতে দেওয়া উচিত ছিল, বাইকারদের জন্য আলাদা লেন করা উচিত ছিল। সেতু কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশনা থাকলেও সেটি মোটরসাইকেল চালকরা অবশ্যই মানবেন।

অপর মোটরসাইকেল চালক আমানুর রহমান হৃদয় বলেন, আমরা সবাই তো এ দেশের নাগরিক। এ এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করার অধিকার সবাই রাখেন।

এ বিষয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ২ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হলেও এটি দিয়ে কোনো পথচারী ও বাইসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। একই সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো তিন চাকার কোনো বাহনও এ উড়াল সড়ক ব্যবহার করতে পারবে না।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দ্রুতগতিতে গাড়ি চলাচল করবে। এজন্য সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এ কারণে টু-হুইলার ও থ্রি-হুইলার নিষিদ্ধ করা ভালো সিদ্ধান্ত। কারণ, এতে দুর্ঘটনা কম হবে।

ঢাকা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য ২০১১ সালের জুন মাসে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) আওতায় প্রকল্পটি ২০১৬ সালে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু নকশা বদল, ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতা, অর্থের সংস্থানসহ নানা জটিলতায় নির্মাণকাজ শেষ করার সময়সীমা পাঁচবার পেছায়।

তবে, পুরো প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হবে বলে জানা যায়। শুরুতে উড়ালসড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় আট হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকায়। সর্বশেষ ট্যাক্স, ভ্যাটসহ প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৬ হাজার কোটি ৭০ লাখ ৭ হাজার ১৫৩ টাকা।

ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড হচ্ছে বিনিয়োগকারী কোম্পানি। এতে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের ৫১ শতাংশ, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের (সিএসআই) ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।


মন্তব্য