ঢাকার যানজট কমাতে সহায়তা করবে যুক্তরাজ্য
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২৯ PM , আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২৯ PM

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং ইউকেস ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রথম ধাপে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা, ট্রাফিক সিগন্যাল, যানজট নিরসনে কাজ করবে সংস্থা দুটি।
আজ বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশান নগর ভবনের সম্মেলনকক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথরিন কুক এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে শুরুর আগে ডিএনসিসি মেয়র ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে সঙ্গে নিয়ে ডিএনসিসির ষষ্ঠ তলায় প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে প্রদর্শিত প্রধানমন্ত্রীর ৭৭টি প্রতিকৃতি ঘুরে দেখেন।
আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জন্য আজ একটি বিশেষ দিন। ঢাকা উত্তরে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি হওয়ায় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে৷ আমি সব সময় চ্যালেঞ্জ হিসেবে গণ্য করি, সমস্যা হিসেবে দেখি না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শহরকে আহ্বান জানিয়েছি একসাথে কাজ করার জন্য। পুরো বিশ্ব আজ কানেক্টেড।
কোনো একটি দেশ ভালো না থাকলে এর প্রভাব অন্য দেশের ওপর পড়ে। কাউকে পেছনে রেখে এগিয়ে যাওয়া যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সরকারের সংস্থাটির সাথে ডিএনসিসি যৌথভাবে কাজ করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো এই উদ্যোগ। এই সমঝোতার আলোকে দীর্ঘ মেয়াদে ডিএনসিসির সাথে এফসিডিও কাজ করবে।
প্রথম ধাপে পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করবে সংস্থা দুটি। ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন (টিএফএল) তাদের শহরে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেছে, যেটি বিশ্বে অত্যন্ত বিখ্যাত। ডিএনসিসি লন্ডন শহরের পরিবহন ব্যবস্থার (টিএফএল) জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করে ঢাকা শহরে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। লন্ডন শহরে বিদ্যমান বাস ফ্রাঞ্চাইজি মডেল ও ট্রাফিক সিগন্যাল সিস্টেমের অভিজ্ঞতার আলোকে কার্যক্রম গ্রহণ করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। আমরা ইতিমধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যৌথভাবে বাস রুট র্যাশনালাইজেশন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি।
যুক্তরাজ্য সরকারের সংস্থাটির সাথে এই পদক্ষেপ ঢাকা শহরের যানজট কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’
মেয়র আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হয়েছে, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল চালু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ইতিমধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যুক্তরাজ্যের এফসিডিওর সাথে প্রথম ধাপে পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করবে ডিএনসিসি এবং দ্বিতীয় ধাপে ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে অন্যান্য বিষয় নিয়ে কাজ করবে।’
যুক্তরাজ্য সরকারের সংস্থাটির সাথে ডিএনসিসির এই চুক্তি স্বাক্ষর মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত করে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অত্যন্ত সুসম্পর্ক বিদ্যমান। আমি বিশ্বাস করি, ডিএনসিসির সাথে আজকের এই সমঝোতা চুক্তির ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। স্থানীয় সরকার পর্যায়ে এ ধরনের পদক্ষেপ দুই দেশের সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করবে।’
এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথরিন কুক বলেন, ‘এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য তথা ঢাকা ও লন্ডন শহরের মধ্যে চমৎকার অংশীদারত্ব শুরু হলো। ঢাকা শহর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য দূরীকরণের কেন্দ্র। ভৌগোলিকভাবে ঢাকা অনেক সম্ভাবনাময় শহর। বিপুল জনসংখ্যার এই শহরে যদিও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যানজটের কারণে পথে অনেক সময় ব্যয় হয়। আমি অত্যন্ত আনন্দিত ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে লন্ডনের পরিবহন ব্যবস্থার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা হবে। এই সমঝোতার ফলে ঢাকাকে একটি স্মার্ট ও সবুজ নগর হিসেবে গড়ে তুলতে লন্ডন ও ঢাকা যৌথভাবে কাজ করবে।’
ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলমের সঞ্চালনায় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যদের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফুল ইসলাম, ডিএনসিসির কাউন্সিলরবৃন্দ এবং ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন ও ডিএনসিসির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।