সৌদি আরবের মরুর ধূসর পাহাড় ছেয়ে গেছে সবুজ গাছ-পালায়!
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:৪৯ PM , আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:৪৯ PM

গত বছরের ডিসেম্বর থেকে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে সৌদি আরবে। যা চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। আর এ বৃষ্টির কারণে দেশটির পূর্বাঞ্চলের মরুভূমির ধূসর পাহাড়গুলো সবুজ হয়ে গেছে। সবুজ গাছ, ঘাস ও লতাপাতায় ছেয়ে গেছে মরুর পাহাড়। আর এই দৃশ্য স্পষ্ট দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্যাটেলাইট থেকেও।
সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত দুই পবিত্র নগরী মক্কা এবং মদিনা। মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা শরীফ ও এর আশপাশে কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত হওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। এবার জানা গেল এ বৃষ্টির প্রভাবে মরুভূমির পাহাড়ে সবুজ গাছ-পালা গজিয়ে উঠেছে।
২০২১ সালের শেষ দিকেও বৃষ্টিপাত হয়েছিল। কিন্ত ২০২২ সালের শেষ দিকে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তা অন্য বছরের তুলনায় বেশি ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরাবিয়াওয়েদার।
আরাবিয়াওয়েদার আরও জানিয়েছে, সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চল অন্যান্য অঞ্চলগুলোর তুলনায় একটু উষ্ণ। এই উষ্ণ আবহাওয়া এবং বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ছেদ করে বেরিয়ে এসেছে সবুজ গাছপালা।
বাইরে বের হয়ে সুন্দর ও মনোরম এ দৃশ্য দেখে সেটি ক্যামেরাবন্দি করছেন অনেকে। সেগুলো টুইটার ও ফেসবুকের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে প্রকাশ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পবিত্র কুরআন ও হাদিসে কী বলা রয়েছে?
বিগত কয়েক বছর ধরে পবিত্র নগরী মক্কার মরুভূমি অঞ্চলগুলো সবুজে ছেয়ে যাচ্ছে। অনেকেই একে কেয়ামতের আলামত হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তবে এক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন ও হাদিসে কী বলা রয়েছে?
কেয়ামতের আলামত নিয়ে আল্লাহ'র রাসূল অনেক নির্দশন বর্ণনা করেছেন। এছাড়া পবিত্র কুরআনেও কেয়ামত নিয়ে অনেক আলোচনা করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘যখন শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে- একটি মাত্র ফুঁক; তখন জমিন ও পর্বতমালাকে উড়ানো হবে। মাত্র একটি আঘাতে সব চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে। ফলে সে দিন মহাপ্রলয় সংঘটিত হবে। আসমান বিদীর্ণ হয়ে যাবে। ফলে সেদিন তা হয়ে যাবে দুর্বল বিক্ষিপ্ত। ফেরেশতারা আসমানের বিভিন্ন প্রান্তে থাকবে। সেদিন তোমার রবের আরশকে আটজন ফেরেশতা তাদের ঊর্ধ্বে বহন করবে। সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোনো গোপনীয়তাই গোপন থাকবে না। (সূরা আল হাক্কাহ, আয়াত, ১৩-১৮)।
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তায়াল এরশাদ করেন, তারা শুধু এই অপেক্ষাই করছে যে, কেয়ামত অকস্মাৎ তাদের কাছে এসে পড়ুক। বস্তুত কেয়ামতের লক্ষণসমূহ তো এসেই পড়েছে। সুতরাং কেয়ামত এসে পড়লে তারা উপদেশ গ্রহণ করবে কেমন করে?’ (সূরা মুহাম্মদ, আয়াত, ১৮)
কেয়ামতের আগে পৃথিবীতে ছোট-বড় অনেক আলামত প্রকাশ পাবে। ছোট আলামতগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, তীব্র ঠান্ডা ও দাবদাহসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। এতে করে মাঠঘাট যেমন ফসলহীন হয়ে পড়বে; প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে মরু অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির কারণে গাছপাল বৃদ্ধি পাবে। পানির ছোঁয়ায় শুষ্ক মরুভূমি হয়ে যাবে সবুজ অরণ্যে।
হজরত আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে না যে পর্যন্ত সম্পদের প্রাচুর্য না আসবে। এমনকি কোনো ব্যক্তি সম্পদের জাকাত নিয়ে ঘুরবে কিন্তু নেয়ার মত লোক পাবে না। আরবের মাঠ ঘাট তখন চারণভূমি ও নদী-নালায় পরিণত হবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস, ২২২৯)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেয়ামতের যেসব আলামতের বর্ণনা দিয়েছেন, তার মধ্যে বড় আলামতগুলো হলো- ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ, মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব, ঈসা আলাইহিস সালামের আগমন, ইয়াজুজ-মাজুজের আত্মপ্রকাশ, পূর্ব-পশ্চিম ও আরব অঞ্চলে বড় ধরণের তিনটি ভূমিধ্বস, বিশাল ধোঁয়া, পশ্চিম গগণে সূর্যোদয়, অদ্ভুত জন্তুর প্রকাশ, ইয়েমেন থেকে আগুন বের হয়ে মানুষকে হাঁকিয়ে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। -(সহিহ জামে আস্-সগীর, হাদিস ৭৭৫২)।