সামাজিক মাধ্যমে ব্র্যাক-বিকাশ-আড়ং বয়কটের ডাক; বাস্তবে যা দেখা গেলো

ব্র্যাক
  © ফাইল ছবি

সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ‘শরীফ থেকে শরীফা’র গল্পের পাতা ছিঁড়ে প্রতিবাদ করেছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলোসফির খণ্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। এ ঘটনার পর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের আয়োজনে ‘বর্তমান কারিকুলামে নতুন পাঠ্যপুস্তক : বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ‘শরীফ থেকে শরীফা’র গল্প তুলে ধরে বইয়ের পৃষ্ঠা ছিড়ে প্রতিবাদ জানান আসিফ মাহতাব। 

ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারের গল্প ঢুকিয়ে শিক্ষার্থীদের মগজধোলাই করা হচ্ছে। এ সময় তিনি এই পাঠ্যবই থেকে ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসিফ মাহতাবের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়। এরই অংশ হিসেবে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

এই ঘটনা ভাইরাল হয়ে যায়। গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একদল আসিফ মাহতাবের বই ছেড়ার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। আরেকদল আসিফ মাহতাবের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন জানিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়কে বয়কটের ডাক দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্র্যাককে বয়কটের ডাক উঠেছে। অনেকেই বিভিন্ন স্টোরি শেয়ার করে ব্র্যাকের অন্য প্রতিষ্ঠান আড়ং ও বিকাশ বয়কটেরও আহ্বান জানিয়েছেন।

এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিসমিল্লাহ ইসলামিক ষ্টোরে অনলাইন বেচা-কেনায় (বিকাশের যাবতীয় লেনদেন) বন্ধ ঘোষণা করলাম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, বেশি কিছু লাগবে না ব্র্যাকের দুইটা প্রতিষ্ঠান আড়ং আর বিকাশ বয়কট করুন, তাদের ব্যাংকে লেনদেন করা বন্ধ করে দিন, এক সপ্তাহের ভিতর এরা ক্ষমা চাইতে বাধ্য হবে। 
মনে আছে? আড়ংয়ে একজনের চাকরি হয়নি, শুধু দাঁড়ি থাকার কারণে! আপনারা প্রতিবাদ করছিলেন, একদিন পর আড়ং ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছিল।

আরেকজন পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, বিকাশ আর ব্র্যাক বয়কট কিন্তু আসল সমাধান না। আপনি, আমি, আমরা কয়েকজন বই কিনে সেই গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলবো সেটাও আসল সমাধান না।
দাবি টা এমন হোক, পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘শরিফ শরিফা’র গল্প মুছে ফেলা হোক।

আরেকজন তাদের পেমেন্ট মেথড থেকে বিক্যাশকে বাদ দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, বয়কট বিকাশ; আমাদের পেমেন্ট মেথড থেকে বিকাশ বাদ দেওয়া হলো। নগদ/রকেট/উপায় ও ব্যাংক এর মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন।

এক বিকাশ এজেন্ট বাংলাদেশ মোমেন্টসকে জানান, গত শুক্রবার থেকে তার দোকানে লেনদেন কমেছে। তবে তিনি এর কারণ জানেন না বলেও জানান।

অন্য আরেক বিকাশ এজেন্ট মোমেন্টসকে বলেন, তার দোকানে লেনদেন কমেনাই।

এক বিকাশ গ্রাহকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলাদেশ মোমেন্টসকে জানান, আমরা মনে হচ্ছে বিকাশের লেনদেন কমেনাই। তিনি বলেন, আমি নিজেই মাসে দুইবার লেনদেন করি, আমার বিল্ডিংয়ের সবাই করে। এখন দেশের খবর কী সেটা বলতে পারবো না।

রাজধানীর আড়ংয়ের এক শোরুমে সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতাদের ভিড় স্বাভাবিক।


মন্তব্য