দ্বার খুলছে আগামীকাল; বইমেলার নিরাপত্তায় সতর্ক ডিএমপি

জাতীয়
  © সংগৃহীত

মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতি স্মরণে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’। মেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

ভাষার মাসের প্রথমদিন বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবমিলিয়ে বরাবরের মতো এবারো বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকছে মেলার আয়োজন।

জানা যায়, এবারের মেলায় ৬৩৫ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ৯৩৭টি ইউনিট। এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০ প্রতিষ্ঠানকে ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭৬৪ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ৫১৫ প্রতিষ্ঠান।

মাসব্যাপী দেশের বৃহত্তম এবং ঐতিহাসিক ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৪’ কে ঘিরে এখন নেওয়া হচ্ছে একেবারেই শেষ সময়ের প্রস্তুতি। স্টল ও প্যাভিলিয়ন নির্মাণ, সাজসজ্জা এবং অন্যান্য কার্যক্রমে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিস্ত্রিরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে সাজ সাজ রব। হাতুড়ি বাটালের ঠুকঠাক শব্দ চারদিকে। বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টল ও প্যাভিলিয়নের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে অনেক আগেই। এখন চলছে রং করা, সাজ-সজ্জা বাড়ানোর কাজ। পিভিসি বোর্ড, ফোম, ককশিট আর বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে স্টলের ভেতরে ও বাইরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করা হচ্ছে। টানা হচ্ছে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেটসহ অন্যান্য তার। এসবের পাশাপাশি বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকেও তৈরি করা হচ্ছে আর্চওয়ে, ঘোষণা বুথ, মোড়ক উন্মোচন মঞ্চ এবং চারপাশের নিরাপত্তা দেয়াল।

গোলাম রাব্বানী নামের এক কাঠমিস্ত্রি বলেন, স্টল বানানোর সবকাজ শেষ। এখন শেষ সময়ের সাজগোছ চলছে। সবাই যার যার মতো করে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছে। হালকা বোর্ড, ককশিট দিয়ে সাজসজ্জা করা হচ্ছে। আমার কাজও প্রায় শেষ। এখন চারপাশে বেষ্টনি এবং বইয়ের তাক তৈরি করা হচ্ছে।

মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা বা বিন্যাস আগের মতোই রাখা হয়েছে। শিশু চত্বর রাখা হয়েছে আগের জায়গাতেই। সেখানে মেলায় আসা শিশুদের জন্য ‘শিশুপ্রহরের’ মঞ্চ তৈরির কাজও প্রায় শেষ।

এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, বইমেলায় জঙ্গি হামলার কোনো হুমকি নেই। তবে সবদিক মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বুধবার  রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অমর একুশে বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, বইমেলা অসাম্প্রদায়িক আয়োজন। এই আয়োজনকে বিভিন্ন সময় হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। নাশকতা ও জঙ্গি তৎপরতার অতীত ঘটনা রয়েছে। এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে মাথায় রেখে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই।

বিভিন্ন সময় বেশকিছু বইয়ের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে পুলিশ। এবার এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, বই দেখার বিষয়টি বাংলা একাডেমি করে থাকে। তবে এমন কোনো লেখা বা বিষয় পাঠকের নজরে আসে বা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং সেটি নিয়ে যদি কোনো সমালোচনা হয় তখন পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ করা ও প্রয়োজন হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

তিনি বলেন, এবারের মেলায় বিশেষ একটি সুবিধা যুক্ত হয়েছে। মেট্রোরেলের একটি স্টেশন মেলার গাঁ ঘেষে। তাই দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধা বাড়বে। এছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিটিউট গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশ সহজ হবে।

‌‘পড় বই, গড় দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আগামীকাল শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪। এদিন বিকেল তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করবেন।