ভাইরালের ভাইরাসে আক্রান্ত এবারের বইমেলা!

বইমেলা
  © ফাইল ছবি

চলছে অমর একুশে বইমেলা-২০২৪। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এই মেলা চলবে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু বিগত বছরের বইমেলা থেকে এবারের বইমেলা অনেকটা ব্যতিক্রম। তিশা-মুশতাক দম্পতি, প্রতারক ডা. সাবরিনা, টিপু সুলতানের মতো বিতর্কিতদের ভাইরাল ইস্যুতে বইমেলা মনে হয় ভাইরাল ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বইমেলায় আগত দর্শনার্থীরা মনে করছেন, এইরকম বিতর্কিত ব্যক্তিদের কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

রাজধানীর উত্তরা থেকে দুই বান্ধবীসহ বইমেলায় ঘুরতে এসেছেন অনামিকা নামের এইচএসসি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী। বইমেলায় এসে তার অনুভূতি কেমন-এমন প্রশ্নের উত্তরে এই তরুণী বলেন, “ আমিতো বইমেলা দেখতে আসিনি।” কেন এসেছেন তাহলে- এ প্রশ্নের জবাবে এই শিক্ষার্থী জানান, “ শুনলাম আজকে নাকি তিশা ও মুশতাক আসবেন। ডা. সাবরিনাও নাকি আসেন। আমি মূলত তাদেরকে দেখার জন্যই বইমেলায় এসেছি।”

শুধু অনামিকা নয় অন্তত দশ জন স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের সবার ভাষ্য একই, “ ফোনে তো প্রতিদিনই এদের নিয়ে ভিডিও দেখি। আজকে বইমেলায় সরাসরি দেখতে আসলাম আসলে তারা কেমন।”

সরেজমিনে বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, বইমেলায় উপচেপড়া ভীড়। কিন্তু এই সংখ্যার মধ্যে একটি বড় অংশ তরুণ-তরুণীরা। যদিও এই তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটি অংশ তিশা-মুশতাক দম্পতি ও প্রতারক ডা. সাবরিনা ইস্যুতে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

হুজাইফা নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ আমিতো মনে করি এদেরকে বইমেলায় ঢুকতে দেয়া ঠিক হয়নি। এদের কারণে বর্তমান প্রজন্ম প্রতারণায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এদেরকে সামাজিক, পারিবারিক সব দিক দিয়ে বয়কট করা জরুরী।”

তবে এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় এসেছিলেন প্রতারক ডা. সাবরিনা। পরে বইমেলায় আগত দর্শনার্থীদের ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনিতে হেনস্তা হতে হয়েছে এই চিকিৎসককে। সমালোচনা ও ঘৃণার মধ্যেও এদিন মেলায় স্টক আউট হয় তার লেখা বই।

একই ঘটনা ঘটে তিশা-মুশতাক দম্পতির সাথেও। গত ৯ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে কয়েকজন আনসার সদস্যদের নিরাপত্তায় পালিয়ে যান তারা। এ সময় তাদের চারপাশ ঘিরে দর্শনার্থীরা ভুয়া, ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন।

পরে অবশ্য বাসায় গিয়ে রাত ১০টায় দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এ দম্পতি দাবি করেন, এদিন বইমেলায় তারা পাঠকদের ভালো সাড়া পেয়েছেন। এতে করে তাদের বই স্টকআউট হয়ে গেছে বলেও দাবি করা হয়। যদিও তাদের এই দাবির কোন ভিত্তি ছিলো না বলে মেলায় আগত দর্শনার্থীরা জানান।

এদিকে টিপু সুলতানের মতো বই বিক্রেতার কারণেও তৈরি হচ্ছে নানা বিতর্ক। যদিও এর আগে দর্শনার্থীদের চাপে বইমেলা থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি। তবে আবারো বইমেলায় টিপু সুলতানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। আজ রবিবার বইমেলায় তাকে বই বিক্রি করতে দেখা গেছে।

টিপুর কারণে ভুঁইফোড় ইউটিউবারদের আনাগোনাও বেড়ে গেছে বইমেলায়। এতে করে অসুস্থ কন্টেন্ট বৃদ্ধি পাওয়ায় তরুণ প্রজন্ম মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন অনেকেই।