নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে গুজবে কান দিবেন না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী
  © সংগৃহীত

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১২ মার্চ শুরু হতে পারে পবিত্র রমজান। রোজা শুরুর আগেই বেড়েছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম। এবার নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে গুজবে কান না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনা বলেন, সকলকে অনুরোধ করবো গুজবে কান দেবেন না। সকলে সচেতন থাকলে আর গুজবে কান না দিলে- তাহলে গুজব ছড়িয়ে কেউ সমস্যা তৈরি করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আলী আজমের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা এ কথা বলেন।

আলী আজম তার প্রশ্নে বলেন, নিত্যপণ্যের দাম অন্য সময় মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলেও রজমানে ব্যতিক্রম দেখা যায়। এ সময় অধিক মুনাফালোভী কিছু লোভী অনৈতিকভাবে পণ্য গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার হীন প্রচেষ্টা চালায়। এ প্রেক্ষাপটে রজমানে পণ্যের মূল্য স্বস্তির মধ্যে রাখতে সিন্ডিকেটধারী ও বিশেষ করে বিএনপি জামাতের গুজবের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না?

উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মজুত যাতে করতে না পারে তার জন্য কী কী করণীয় আগেই জানিয়েছি। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে কোনোরকম মানুষের খাদ্য নিয়ে খেলতে না পারে সেজন্য যথেষ্ট সচেতন রয়েছি। সেই সাথে বলতে চাই বহু পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়। পরনির্ভরশীল। আমরা পরনির্ভশীলতা কাটিয়ে উঠতে চাই। নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে চাই।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগগুলি ব্যবহার করে এতে উদ্দেশ্য সফল হয় না। দ্রব্যমূল্য কমে না। এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চোখ উল্টিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার। না হলে মানুষের শান্তি আসবে না। তারা কথা শুনে না। বিষয়টি কঠোর মনিটরিংসহ অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় পদক্ষেপ নেবে কী না।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মোবাইল কোর্টসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তারপরও যদি ইচ্ছাকৃতভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে একটা কথা বলি। রমজান হচ্ছে কৃচ্ছ্রতা সাধনের মাস। রমজানে মানুষ যেন কম খাবার গ্রহণ করে, খাদ্য সংরক্ষণ করে। কিন্তু আমাদের এখানে দেখি যেন খাবার গ্রহণের বিষয়টি একটু বেড়েই যায়। প্রকৃতপক্ষে সেজন্য তো রজমান নয়। রমজান হচ্ছে সংযমের মাস। সংযম করতে হবে। বিশেষ কোনো একটা জিনিস না খেলে হবে না। রোজা রাখা যাবে না। বা ইফতার করা যাবে। এই মানসিকতাটা বদলাতে হবে। 

প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশে যে খাদ্য পাওয়া যায় সেটা দিয়েই রোজা খুলতে পারি। কারণ এটা না খেলে চলবেই না এটা তো কথা নয়। অন্য সময় মানুষ কী খায়। সেভাবেই খাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাহলে একটা জিনিসের জন্য কান্নাকাটি শোনা যাবে না। তবে ইদানীং দেখা যাচ্ছে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম কিন্তু কমেছে। একেবারেই কমেনি তা নয়। কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের দাম যদি বেশি করে যায় তহলে কৃষক ন্যায্য মূল্য পায় না। আবার যদি দাম বেশি বেড়ে যায় তাহলে নির্দিষ্ট আয়ের লোকের কষ্ট হয়। ভোক্তার জন্য কষ্ট হয়। এজন্য আমাদের দুটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। এ ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট সচেতন।

তিনি আরও বলেন, শুধু সরকারই সব দেখবে সেটা তো নয়। যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি আছেন তাদেরও একটা দায়িত্ব রয়েছে। বাজার মনিটরিংয়ে সকলে সহযোগিতা করলে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা এভাবে নিত্যপণ্যের মূল্য অসৎ উপায়ে বাড়াতে পারবে না। জনগেণকে আহ্বান করবো তারা এটার বিষয়ে নজর রাখলে সবকিছু সহজ হয়ে যায়। আর আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। আরো পদক্ষেপ নেবো। মোবাইল কোর্ট বসিয়ে শাস্তি দিচ্ছি। আমরা দিচ্ছি। আমাদের যথাসাধ্য করে যাচ্ছি।