রাজধানীর ৭০ শতাংশ ভবনে অনুমোদিত নকশা মানা হয়নি: রাজউক চেয়ারম্যান

ভবন
  © ফাইল ছবি

রাজধানীর বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন নিহত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। অনুমোদনহীন ভবনে রেস্তোরাঁ, রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করা হচ্ছে। এদিকে রাজধানীর ৭০ শতাংশ ভবন মালিক অনুমোদিত নকশা না মেনে ভবন নির্মাণ করছেন বলে জানালেন রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা। আর তাই ভবন নির্মাণে অনিয়ম নোটিশ না দিয়ে সরাসরি বিদ্যুৎ, গ্যাস আর পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। বারবার নোটিশ দেয়ার পরও কাজ না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনার দায় সরকারের প্রতিটি সংস্থাকেই নিতে হবে। 

২০১৯ সালে চুড়িহাট্টার একটি ভবনে আগুন লেগে প্রাণ গেছে ৬৭ জন। ২০০৬ সালে কাপড়ের কারখানায় ৬৫, ২০১০ সালে নিমতলী রাসায়নিক গোডাউনের আগুনে ১২৪, ২০১২ সালে তাজরিন কারখানায় ১৫০, ২০২১ সালে সজীব গ্রুপে ৫২ জন, ২০২২ সালে বিএম ডিপোতে ৫১ জন আগুনে পুড়ে মারা যান। এসব ঘটনায় ভবন নির্মাণে অনিয়ম পেলেও মালিক বা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কারোই বিচার হয়নি।

প্রায় ২ কোটি মানুষের বাস এই নগরে বেইলি রোডের মত শত শত মৃত্যুকূপ গড়ে উঠছে। রাজউক বলছে, অন্তত ৭০ ভাগ মালিক নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করেন না। 

রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, হাজার লোক ব্যত্যয় ঘটাচ্ছে। আমাদের কাছ থেকে অনুমোদন নেয় এক রকম, ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যত্যয় ঘটায় এরকম সংখ্যা ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ হবে।  

রাজউক চেয়ারম্যানের হুঁশিয়ারি, আর কোন নোটিশ নয়, অনিয়ম পেলেই গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সেবা বন্ধ করে দেয়া হবে। 

আনিছুর রহমান আরও বলেন, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস বন্ধ করে দেই তাহলে একদিনও তারা বিল্ডিং ব্যবহার করতে পারবে না। আর আমরা যদি নোটিশ দেই তাহলে এটার ব্যবহার চলতেই থাকে কারণ তাদের সুযোগ-সুবিধা চলতে থাকে। আবার অনেক সময় আদালতেও চলে যায়, এটা নিষ্পত্তি হতে সময় লাগে।  

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভবনগুলোই সাজসজ্জা করা হচ্ছে আগুন সহায়ক হিসাবে। সাজসজ্জায় যেসব উপকরণ ব্যবহার কার হচ্ছে তাতে তিন মিনিটের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। 

অগ্নি নির্বাপণ বিশেষজ্ঞ মেজর (অব:) শাকিল নেওয়াজ বলেন,সিলিংয়ে কেমিক্যাল, দরজায় কেমিক্যাল, রাবার আইটেম, পিভিসি আইটেম, সিন্থেটিক আইটেম, এগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে জ্বলে ওঠে, ধোঁয়া তৈরি করে এবং তাপমাত্রা বাড়ায়।    

ঈদকে সামনে রেখে ঝুঁকিপূর্ণ বিপণী বিতানে না যেতে দু-একদিনের মধ্যেই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।


মন্তব্য