গরমে চিফ হিট অফিসারের আরও কিছু পরামর্শ

বুশরা
  © সংগৃহীত

এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সারাদেশেই বেড়েছে তাপমাত্রা। দেশের কয়েকটি জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। ঢাকার গড় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। প্রচণ্ড গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন।  এরই মধ্যে হিট স্ট্রোকে কয়েকজনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে নগর বন কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে এই কথা জানান তিনি। ২০২৩ সালের এপ্রিলে তাকে চিফ হিট অফিসার পদে নিয়োগ দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অ্যাড্রিয়েন আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টার।

এ সময় বুশরা আফরিন বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ আরও কিছু সরকারি-বেসরকারি ও এনজিওর সঙ্গে আমরা যুক্ত হয়ে বেশ কিছু কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছি। কল্যাণপুর ও বনানীতে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে আমরা নগর বন তৈরি করতে যাচ্ছি। যা একই সঙ্গে শীতলকরণ, বায়ুদূষণরোধ এবং মাটির গুণাগুণ বৃদ্ধি করবে।

ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। এ অবস্থায় এ থেকে সুরক্ষায় সাধারণ কিছু পন্থা অবলম্বন করার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

বুশরা আফরিন বলেন, খুব সাধারণ কিছু পন্থা অবলম্বন করে আমরা নিজেদের ঝুঁকিমুক্ত রাখতে পারি। যেমন- বেশি বেশি পানি পান করা, ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করা, যথাসম্ভব ছায়ার মধ্যে থাকার চেষ্টা করা এবং অসুস্থবোধ করলে বিশ্রাম নেওয়া বা বেশি খারাপবোধ করলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

এই অতিরিক্ত গরমে সংকট মোকাবিলায় ঢাকা শহরে আরও বেশি করে গাছ লাগানো এবং পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নিযুক্ত হওয়ার পর ঢাকার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন বলেন, ঢাকায় পানীয় জলের সুব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছি। পাশাপাশি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘কুলিং স্পেস’ এর ব্যবস্থা করার জন্য সিটি করপোরেশনকে পরামর্শ দিয়েছি। যেন পথচারীরা বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পান। তবে নগরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমাদের অবশ্যই আরও বেশি করে গাছ লাগাতে হবে এবং পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণে এগিয়ে আসতে হবে।

এর আগে তীব্র তাপমাত্রা মোকাবেলায় বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন বুশরা আফরিন। তীব্র দাবদাহ মোকাবিলায় বুশরা জানান, এই অবস্থা থেকে সবাইকে বাঁচানোর জন্য তারা নিয়মিত ‘হিট অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন’ চালাচ্ছেন। তার মতে, ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা কমাতে আরও বেশি গাছ লাগানো জরুরি।

চিফ হিট অফিসার বলেন, আমাদের এখানে রাস্তার ধারে ২ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়। শুধু গাছ লাগালেই হবে না, সেগুলোর উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণও করতে হবে। নগরে বনায়ন করা খুব জরুরি। এখানে যে ফাঁকা এবং পরিত্যক্ত জায়গাগুলো আগে সেখানে সবুজায়ন করার দিকেও আমরা নজর দিয়েছি। আমাদের এখানে আরও অনেক পার্ক এবং সবুজে ঘেরা জায়গা দরকার। তাতে তাপমাত্রা যেমন কমবে, তেমনই পাখিসহ নানা প্রাণীও ফিরে আসবে।

ব্যক্তি উদ্যোগেও নগরবাসীকে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানান চিফ হিট অফিসার। বুশরা বলেন, তীব্র দাবদাহে আমরা নিজেরা যদি সচেতন থাকি। আমরা যদি বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আমাদের ব্যাগে একটা পানির বোতল, টুপি, ফ্যান, ছাতার মতো জিনিসপত্র সাথে রাখি তাহলে কিন্তু অনেকটাই নিরাপত্তা পেতে পারি।


মন্তব্য