যখন ও  যেসব এলাকায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় রেমাল

ঘূর্ণিঝড়
  © ফাইল ছবি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং এটি শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এরপর রোববার মধ্যরাতের দিকে এটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এই “প্রেডিকশন” যে শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকবে, সেটি জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, “এখন মনে হচ্ছে রোববার মধ্যরাত। কিন্তু অনেক সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতি বেড়ে যেতে পারে, অনেক দ্রুততার সাথে সে উপকূলের দিকে আসতে পারে। এ ধরনের বেশ কিছু বিষয় আছে।”

সেক্ষেত্রে, এই ঘূর্ণিঝড়টি সর্বপ্রথম যেখানে আঘাত হানবে, সেখানের বাতাসের গতিবেশ ঘণ্টায় ১২০-১৩০ কিলোমিটার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে আঘাত হানা সর্বশেষ সুপার সাইক্লোন ছিল ২০০৭ সালের সিডর (চোখ)। এটির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২৩ কিলোমিটার। তখন ১৫-২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়েছিলো।

রেমাল-এর গতিবেগ সম্বন্ধে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, “সিডরের মতো অত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় না এটি, ঘূর্ণিঝড় রেমাল সিডরের থেকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল।”

শনিবারে প্রকাশিত আবহাওয়ার সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর ৬) বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটির অবস্থান সম্বন্ধে বলা হয়েছে।

এটি ২৫শে মে সকাল নয়টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্ধর থেকে ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিলো।

তবে এটি উত্তরপূর্বদিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে। ওই সময় পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মাঝে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

এছাড়া, কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সকল সমুদ্রবন্দরে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

এখন, আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্তমানে যেই অবস্থান দেখাচ্ছে তাতে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রটি বাংলাদেশের ওপর দিয়েই অতিক্রম করার সম্ভাবনা আছে।

তবে বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকা এবং বরিশালের পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলায় রেমাল-এর আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি বলে জানান মি. ফারুক।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিবুর রহমান আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টিতে সাতক্ষীরা থেকে চট্টগ্রামের কক্সবাজার পর্যন্ত কমবেশি অ্যাফেকটেড হতে পারে। ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এ জন্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হতে পারে।