নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশন: টয়লেট আছে নেই ছিটকিনি

নীলফামারী
নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশন   © টিবিএম

টয়লেট আছে, দরজা আছে কিন্তু নেই দরজার ছিটকিনি। ভিতরে ঢুকে ছিটকিনি ছাড়াই কোনমতে দরজা আটকে যদি আপনি প্রাকৃতিক কাজ সারতে চান পড়তে হবে নানা বিপত্তিতে। ভিতরে ঢুকেই মনে হবে আপনি কোন কনডেম সেলে ঢুকে পড়েছেন। সেখানে যে বদনা রাখা আছে তা আরেক অদ্ভুত বস্তু। নল দিয়ে বদনায় পানি পড়ছে কিন্তু কোনভাবেই তা পানি আটকিয়ে রাখতে পারছে না; সাথে 'বোনাস' হিসেবে দুর্গন্ধ তো আছেই।

শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুর দুইটার দিকে এমনিই চিত্র দেখা গেছে উত্তরের জেলা নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশনের প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগারের টয়লেটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এই শৌচাগারে টয়লেট মোট দুইটি। এর মধ্যে একটি টয়লেট সবসময় তালাবদ্ধ থাকে এবং অন্যটির দরজার ভিতরে ও বাইরে নেই ছিটকিনি। বাইরে বৈদ্যুতিক সুইচ থাকলেও ভিতরে নেই বৈদ্যুতিক বাতি। যে বদনা রাখা হয়েছে তার একপাশে বড় ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় পানি আটকে থাকার নেই কোন সুযোগ। পাশাপাশি নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে তৈরি হয়েছে উৎকট গন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে টয়লেটে যে কেউ ঢুকলে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বাইরে কাউকে পাহারায় বসিয়ে রাখতে হয়। এছাড়াও বিশ্রামাগারের ভিতরে দেয়ালে মাকড়সার জালের বিস্তৃতি নষ্ট করেছে এর সৌন্দর্য।

"এইটা কোন টয়লেটের মধ্যে পড়ে? দরজার ওপরে লেখা প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগার। কিন্তু ভিতরে ঢুকেই দেখি বস্তির মতো পরিবেশ। দরজায় কোন ছিটকিনি নেই, নেই কোন বৈদ্যুতিক বাতি, এমন বদনা রাখছে সেটাতে আবার পানি আটকে থাকছে না। এমন পরিস্থিতিতে আমি পুরাই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম,”খুব আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী।

“রেলওয়ের ওপরে প্রতি বছর সরকার যে এতো এতো বাজেট দেয় তাহল টাকাগুলো যায় কোথায়? এগুলা দেখার কি কেউ নেই। একজন নারী হিসেবে এরকম পরিস্থিতিতে পড়াটা অনেক কষ্টের,” যোগ করেন তিনি।

স্টেশনের আশেপাশে থাকা লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিন মাসের বেশি সময় ধরে এরকম পরিস্থিতির মধ্যে আছে টয়লেটটি। এক অটোরিকশা চালকের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান,“আমি এখানেই রিকশা চালাই। মাঝে মাঝে টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু টয়লেটের এখন যে বাজে অবস্থা কোন পরিবেশ নেই। তিন মাসের বেশি সময় ধরে এরকম আছে, ঠিক করার কোন নাম নেই।”

পবিত্র ঈদুল আজহার কারণে বেড়েছে মানুষের বাড়িতে আসার হিড়িক। এর মধ্যে স্টেশনের এরকম অব্যবস্থাপনায় চরম বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। অতি দ্রুত এই বিড়ম্বনার সমাধান চেয়েছেন তারা। তবে এ বিষয়ে নীলফামারী রেলওয়ে স্টেশনের সংশ্লিষ্ট কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।