যমুনার স্রোতে ধসে পড়ছে নির্মাণাধীন মুজিব কিল্লা

কোটা
  © ফাইল ফটো

নদীভাঙন ও ঘূর্ণিঝড়সহ চরাঞ্চলের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মাণাধীন মুজিব কিল্লার একাংশ যমুনা নদীর স্রোতে ধসে পড়েছে। এটি উপজেলার চর গিরিশ ইউনিয়নের ছালাল ও চর ডগলাস মৌজার মাঝখানে দুই কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছিল।

চলতি বছরের জুলাই মাসেই এটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু নির্মাণ শেষ না হতেই ৫ জুলাই যমুনার পানির স্রোতে মুজিব কিল্লার একাংশ নদীতে ধসে পড়ে।

জানা যায়, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর স্থানীয় এমপি প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কাজটি বাস্তবায়ন করছে সজীব কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আশঙ্কা রয়েছে যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি পুরোপুরি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষায় নির্মাণাধীন এই মুজিব কিল্লা আদৌ টিকবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছি। এতো টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন কিল্লাটির কাজ শেষ না হতেই নদীতে ধ্বসে যাওয়ায় তারা বিস্ময় প্রকাশ করেন।

তারা আরও জানান, মুজিব কিল্লার পূর্ব পাশে নদীর পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি কালভার্ট রয়েছে। দুই বছর আগে কালভার্টটির উত্তর পাশের জায়গা ভরাট করে ডগলাস-ভেটুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। যার প্রভাব এই মুজিব কিল্লার উপর পড়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এটি বি-টাইপের স্থাপনা। আয়তন ৯ হাজার ৩০০ বর্গফুট। প্রকল্পের নাম ‘মুজিব কিল্লার নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’। উদ্দেশ্য, দুর্যোগকবলিত এলাকার জনসাধারণ ও তাদের পরিবারের জীবনরক্ষা, মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী নিরাপদে সংরক্ষণ এবং দুর্যোগে আক্রান্ত গৃহপালিত প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করা। স্বাভাবিক সময়ে এটিকে বহুমুখী ব্যবহার করা যাবে। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, খেলার মাঠ ও হাটবাজার হিসেবে ব্যবহার করা, কমিউনিটির উন্নয়নের লক্ষ্যে বৈঠক বা সভার আয়োজন করা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের স্থান ও অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র হিসেবে এটি ব্যবহারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

মুজিব কিল্লার প্রকল্প পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, কিল্লাটি সেখানে টিকবে কিনা তা যাচাই করার জন্য তিন সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী মাসের শুরুতেই কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সেতু বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। নতুন মাটির ওপরে কিল্লা নির্মাণ ও যমুনার পানির স্রোতে কিছুটা অংশ ধসে গেছে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী রিপন মিয়া বলেন, মূল মাটির এক ফুট নিচ থেকেই পিলার তোলা হয়েছে; কিন্তু পানির প্রবল স্রোতের কারণে মূল মাটি সরে যাওয়ায় ধসে গেছে। তারা ৮০ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ করেছেন বলেও দাবি করেন।