৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে: বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র

বন্যা
  © ফেসবুক

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন আঞ্চলে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। শুক্রবার সকালে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। 

সরদার উদয় রায়হান বলেন, ‘আমাদের প্রধান নদী অববাহিকায় আমরা আপাতত বড় কোনো বন্যা ঝুঁকি আর লক্ষ্য করছি না। প্রধান নদী অববাহিকায় সব নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যেমন ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা অববাহিকা এবং মেঘনা অবাবহিকার সুরমা নদী বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর কিছু কিছু পয়েন্টে পানি বিপদসীমার সামান্য উপর নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। এটিও আসলে দ্রুত নেমে যাবে।’ 

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘এখন উজানে যে প্রবাহ তাতে এই মুহূর্তে ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা অববাহিকায় বৃহৎ কোনো বৃষ্টিপাতও নেই। তাই এই মুহূর্তে বন্যার ঝুঁকি দেখছি না। ৪৮ ঘণ্টা পর আমাদের এখন যে বন্যা পরিস্থিতি আছে সেটা উন্নতির দিকে যাবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাবে।’

বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ভয়াবহ হয়ে উঠছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। ১০ জেলায় বন্যাকবলিত অন্তত ৪২ লাখ মানুষ। আকস্মিক বন্যায় ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। অনেকেই ঘর থেকে কিছু বের করতে না পেরে খালি হাতে ছুটে এসেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। দুর্গত এলাকায় এখন দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট।

স্থানীয়রা বলছে, স্মরণকালে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেননি তারা। দুর্গত এলাকাগুলো সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতায় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। 

অভিযোগ উঠেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। তবে ভারত সরকার বলছে, বাংলাদেশের বন্যা গোমতির নদীর ওপর নির্মিত ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে হয়নি। 

বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে এই বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাংলাদেশে বন্যা মূলত বাঁধের নিচের দিকের এই বৃহৎ ক্যাচমেন্টের পানির কারণে।’

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবারের বর্ষায় বৃষ্টিপাত বেশি হতে পারে বলে আগেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছিলেন। অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বৃহস্পতিবার ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে জানান, চলতি বছরের এপ্রিলে ভারতের পুনে শহরে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট আউটলুক ফোরামের ২৮তম অধিবেশনে বলা হয়েছিল, এবারের বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হতে পারে। বাংলাদেশের বৃষ্টি যেমন বেশি হবে, তেমনি বাংলাদেশের উজানে ভারতের রাজ্যগুলোতেও বৃষ্টি বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।