আনসারদের হামলায় ৬ সেনা আহত; একজনের অবস্থা গুরুতর

আনসার
  © ফাইল ছবি

গত কয়েকদিন ধরে চাকরি জাতীয়করণের ১ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় রবিবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে প্রবেশ করে সারাদিন সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। একপর্যায়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপরেও হামলা করেন এই বাহিনীর সদস্যরা। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ছাড়াও শিক্ষার্থী-সাংবাদিকসহ অন্তত ৪০ জন আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হলে তাদের ওপরেও হামলা করেন আনসার সদস্যরা। এতে ৬ সেনাসদস্য আহত হন, যাদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

আজ সোমবার (২৬ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আনসার সদস্য কর্তৃক সচিবালয় এলাকায় সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী 
ঢাকা, ২৬ আগস্ট ২০২৪ (সোমবার):  গতকাল (২৫ আগস্ট ২০২৪) আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েনরত সেনা সদস্যগণ বাংলাদেশ সচিবালয় এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এবং সচিবালয়ের সকল গেটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। এদিন বিভিন্ন সময়ে আনুমানিক ১০ হাজার আনসার সদস্য একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় ঘেরাও করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ০৭ জন উপদেষ্টাসহ সচিবালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে। 

উত্তেজিত আনসার সদস্যদের শান্ত করার জন্য বিকেলে মহাপরিচালক, আনসার ও ভিডিপি সচিবালয়ে আগমন করেন এবং আনসার সদস্যদের সকল দাবি মেনে নেন। এরপরও উত্তেজিত আনসার সদস্যরা সচিবালয় এলাকা ত্যাগ না করে আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং কিছু আনসার সদস্য সচিবালয়ের ০৩ নম্বর গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় উত্তেজিত আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদের উপর অতর্কিত হামলা করে এবং সচিবালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর টহলের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ লাঠি দ্বারা আঘাত করে। এসময় ০৬ জন সেনাসদস্য আহত হয় এবং এর  মধ্যে ০১ জনের অবস্থা গুরুতর। 

এমতাবস্থায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মোতায়েনরত সেনাসদস্যরা বারংবার ধৈর্য সহকারে আনসার সদস্যদের সাথে এনগেজমেন্ট করা সত্ত্বেও উত্তেজিত আনসারগণ নিবৃত্ত না হলে আকাশের দিকে ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সচিবালয় এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। 

এরপর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ০৭ উপদেষ্টা, ডিজি আনসার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সচিবালয়ের সকল কর্মকর্তাগণ সেনাবাহিনীর সহায়তায় সচিবালয় এলাকা নিরাপদে ত্যাগ করেন। মোতায়নরত সেনাসদস্যরা সচিবালয়ে অনুপ্রবেশকারী এবং পরবর্তীতে জীবন রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয় প্রাথর্নাকারি কিছু সংখ্যক আনসার সদস্যকে নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং তাদেরকে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।