শ্রমিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া করুন, কারখানা সচল রাখুন: মালিকপক্ষকে প্রধান উপদেষ্টা

ড. ইউনূস
  © সংগৃহীত

গত কয়েকদিন ধরে বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন গাজীপুরের শ্রমিকরা। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিনভর গাজীপুরের জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকদের আন্দোলনে কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে পুরো অঞ্চল।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা মহানগরীর কাশিমপুর থানাধীন ভবানীপুর এলাকায় অবস্থিত বিগবস করপোরেশন লিমিটেড নামক একটি পোশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেন। প্রায় ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।

শ্রমিক আন্দোলনের কারণে আজ গাজীপুরের ৬টি কারখানা বন্ধ এবং ৩০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

চলমান শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে জানিয়ে মালিকপক্ষকে কারখানা খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'শ্রমিক ভাই-বোনদের অনেক দুঃখ আছে। কিন্তু সেই দুঃখ প্রকাশ করতে গিয়ে আপনাদের মূল জীবিকাই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে সেটা ঠিক হবে না। দেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে সেটা ঠিক হবে না। শ্রমিক-মালিক উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে এসব সমস্যার সমাধান আমরা অবশ্যই বের করব। মালিকপক্ষের কাছে আমাদের আবেদন, আপনারা শ্রমিকদের সঙ্গে বোঝাপড়া করুন। কারখানা সচল রাখুন। অর্থনীতির দুর্বল স্বাস্থ্যকে সবল করে তুলুন।'

ড. ইউনূস বলেন, 'তৈরি পোষাক, ঔষধ শিল্প এসব এলাকায় শ্রমিক ভাই-বোনেরা তাদের অভিযোগ জানানোর জন্য ক্রমাগতভাবে এই শিল্পের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ রাখতে বাধ্য করছেন। এটা আমাদের অর্থনীতিতে যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেটা মোটেই কাম্য নয়। এমনিতেই ছাত্র-শ্রমিক জনতার বিপ্লবের পর যে অর্থনীতি আমরা পেয়েছি সেটা নিয়ম নীতিবিহীন দ্রুত ক্ষীয়মাণ একটা অর্থনীতি।'

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। আমরা এই অর্থনীতিতে প্রাণ সঞ্চারের চেষ্টা করছি। আমাদের উদ্যোগে সাড়াও পাচ্ছি। ঠিক এই সময়ে আমাদের শিল্প কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে, অকার্যকর হয়ে গেলে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট আঘাত পড়বে। সেটা কিছুতেই কারো কাম্য হতে পারে না।'