রাজধানীতে অবিরাম বৃষ্টি, ভোগান্তি চরমে

বৃষ্টি
  © সংগৃহীত

টানা চার দিন ধরে দেশের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার ঢাকায়ও দিনভর বৃষ্টি হয়েছে, যা রাতেও অব্যাহত ছিল। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালের বৃষ্টিতে রাজধানীবাসীর ভোগান্তি চরম আকার ধারন করে। অফিসগামী সাধারণ মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কষ্ট হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

সকালে দেখা গেছে, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বড় রাস্তাগুলোতে পানি না উঠলেও অনেক এলাকার অলিগলিতে পানি জমে গেছে। বৃষ্টির কারণে কাদাপানিতে সয়লাব সব দিক।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন ফারুক মিয়া। তিনি বলেন, ভোর থেকেই বৃষ্টি। ভিজে ভিজেই অফিসে এলাম উপায় কী! প্রথমে রিকশা পাই না। এরপর রিকশা পেলেও ভাড়া অনেক বেশি। বাধ্য হয়ে সেভাবেই অফিসে এলাম।

অবিরাম এই বৃষ্টিতে বেশি ভোগান্তিতে আছেন রাস্তার পাশে রাত কাটানো মানুষগুলো। সারারাত পলিথিনের ভেতরে নিজেকে গুটিয়ে রাত কাটিয়েছেন অনেকে। রিকশাচালকদের ভোগান্তিও ছিল সীমাহীন।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে আকাশে মেঘমালা থাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। আগামীকাল পর্যন্ত বৃষ্টি থাকতে পারে। এরপর কমে আসবে। নিম্নচাপের প্রভাবে সমুদ্র বন্দর ও নদী বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে আগের মতোই সমুদ্র বন্দরে ৩ এবং নদী বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধ্বসের শঙ্কার কথাও জানান তিনি।

গত ২৪ ঘণ্টায় (গত কাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে) ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ৩২ মিলিমিটার। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে পটুয়াখালিতে ২২৩ মিলিমিটার। এ ছাড়া গোপালগঞ্জে ১৩৩, খেপুপাড়ায় ১৮৯, বরিশালে ১৭৭, ভোলায় ১৩৪, মোংলায় ৯৮, সাতক্ষীরা ও সীতাকুন্ডে ৯৪ এবং কক্সবাজারে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়ার সতর্ক বার্তায় বলা হয়, যশোর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত স্থল গভীর নিম্নচাপটি সামান্য পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।