‘আমি কিছু না ভেবেই স্টেজে উঠে গেছি’

ইউনূস
  © সংগৃহীত

নিউ ইয়র্কে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’ অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমসহ তিন জনকে সরকার পতন আন্দোলনের ‘নেপথ্য কারিগর’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।

কিন্তু পরিচয় করিয়ে দেওয়া এই তিন জনের মধ্যে একজনের আন্দোলনে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে।    

প্রাথমিক অভিযোগ উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট থেকে। যেখানে বলা হয় আওয়ামী পরিবারের জাহিন রোহান রাজিন ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের সঙ্গে সমন্বয়ক পরিচয়ে বিল ক্লিনটনের প্রোগ্রামে আসেন। অথচ তিনি আন্দোলনেই ছিলেনই না! সমন্বয়ক তো বহু পরের বিষয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে তাকে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট হিসেবে দাবি করেছেন। ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে তাকে দেখা গেছে সদ্য পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে। এবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন জাহিন রোহান রাজিন। 

এর পরই বিষয়টি নিয়ে মাহফুজ আলম ফেসবুকে পোস্টে করেন। যেখানে তিনি বলেন, সিজিআই ইভেন্টের লোকটা একজন অনুপ্রবেশকারী এবং অসাধু লোক ছিল।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, তৃতীয় তরুণ জাহিন রোহান রাজিন। তিনি হাইড্রোকো প্লাস’র প্রতিষ্ঠাতা। এ বিষয়ে জাহিন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম সিজিআই ফেলো হিসেবে। ড. ইউনূস ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে যখন ডাকলেন, তখন আমি দর্শকসারিতে ছিলাম। পাশে ছিলেন দুই বিদেশি ভদ্রলোক। তারা আমাকে বললেন, তুমি বাংলাদেশি তরুণ, তুমিও যাও। তাই আমি কিছু না ভেবেই স্টেজে উঠে গেছি।’

তিনি বলেন, ‘২০২১ সালের ইউনূস অ্যান্ড ইয়ুথ ফেলো আমি। আমার প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাসের কাজ এগিয়ে নিতে আমি ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছিলাম। নিউইয়র্কে সিজিআইয়ের অনুষ্ঠানে তিনি আসবেন শুনে খুশি হয়েছিলাম এ কারণে যে, তার কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ হবে।’

সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সঙ্গে ছবি ছড়ানো প্রসঙ্গে জানতে জাহিন বলেন, ‘২০২২ সালে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে একটা কাজ করে হাইড্রোকো প্লাস। সে কাজের জন্যই মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে হয়েছিল। সেসময় তোলা ছবিটি। এটি কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এলো, তা জানি না। আন্দোলনের সময় দেশেই ছিলাম। এ আন্দোলন সমর্থন না করার প্রশ্নই আসে না।’

ক্লিনটন ইনিশিয়েটিভের (সিজিআই) অনুষ্ঠানের মঞ্চে ওঠেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ড. ইউনূসের বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা তিথি ও আরেক তরুণ। প্রথম দুজনের নাম সফরসঙ্গীর তালিকায় থাকলেও তৃতীয়জন ছিল না। তিনজন মঞ্চে বিল ক্লিনটনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়ান। 

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মঙ্গলবার ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের ডেকে নেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কেউ নন। মাহফুজ আলম অনুষ্ঠানের মঞ্চে ওঠা তৃতীয় তরুণকে অনুপ্রবেশকারী বা ‘ইনট্রুডার’ বলে উল্লেখ করেন।