রাজধানীর সড়কে অবৈধভাবে চলছে ৮ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা; যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

রিকশা
  © ফাইল ছবি

গত ৫ আগস্টের পর হঠাৎ করে ঢাকার সড়কে বেড়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়কে অবৈধভাবে চলছে প্রায় ৮ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা। প্রধান সড়কে আসার অনুমতি না থাকলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ এ যান। গত দুই মাসে লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও দৌরাত্ম্য থামছে না। পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংখ্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা আর বন্ধ করা সম্ভব নয়।

চলতি বছরের ১৫ মে সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের ঘোষণা দেয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়। এরপর আন্দোলনে নামে রিকশা চালকেরা। এর ৫ দিন পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল সড়ক ছাড়া রিকশা চলাচলের অনুমতি দেন। তবে, সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে চলাচল শুরু হয় মূল সড়কেও।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারন করে। ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে, সড়কে এখন চলছে অন্তত ৮ লাখ অটোরিকশা।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেপ্টেম্বর মাসে ৫০ হাজার, আর অক্টোবর মাসে ৬৬ হাজার এসব রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। ব্যাটারি জব্দ করে নিলামেও তোলা হয়েছে।

ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের পাশাপাশি কিছু স্বেচ্ছাসেবক বা ট্রাফিক সহায়তাকারী নিয়োগ করা হয়েছে, তারাও কাজ করছে। কোনোভাবে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা যাতে মূল সড়কে উঠতে না পারে, কিংবা অনুমদিত কোনো যানবাহন যেন নির্দিষ্ট সড়কে চলাচল করতে না পারে সে জন্য কাজ করছে তারা।’

ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে, ব্যাটারি নিলামে তুললে সেই ব্যাটারি আবারও রিকশাতে ব্যবহার করা হয়। 

ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ খোকন বলেন, ‘আমরা যদি কখনো তাদের এসব অনিয়মের কথা বলতে যাই, তারা বলেন- আপনারা এত নীতিবাক্য বলেন কেন! সরকার আছে না, আপনি কি সরকার? সরকার কি দেখে না, আমি রাষ্ট্রকে ট্যাক্স দিচ্ছি না!’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রিকশা বন্ধ না করে একটি নীতিমালার মধ্যে এনে এই বাহনগুলোকে ঝুঁকিমুক্ত করে তৈরী করতে হবে।

বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ হাদিউজ্জামান বলেন, ‘আমাদের কিছু গাইডলাইন দরকার। এই যে যানবাহনগুলোর সংযোজন হচ্ছে, গ্যারেজগুলোতে তৈরি হচ্ছে, গ্যারেজগুলোর কোনো অনুমোদন নেই। সেখানে কোনো প্রকৌশলী নেই। তাদের টেকনিক্যালি স্কিচ শিডিউল নেই। তারা কিন্তু এই ধরনের যানবাহন তৈরি করে ফেলছে।’ 

এদিকে, সড়কের সবচেয়ে বড় এই সংকট নিয়ে কথা বলতে চায়নি বিআরটিএ।